বিশ্ব

ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান মানেই আমেরিকার চোখে হুমকি

ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান মানেই আমেরিকার চোখে হুমকি


ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া এবং ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্বার্থের জন্য হুমকি’ হিসেবে বিবেচনা করছে ওয়াশিংটন।

এই অবস্থানকে কেন্দ্র করে মার্কিন সরকার এখন ভিসা আবেদনকারীদের অতীত কার্যকলাপ, বিশেষ করে গাজা ভ্রমণ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য ঘিরে কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিশ্বজুড়ে মার্কিন দূতাবাস ও কনস্যুলার মিশনে পাঠানো একটি তারবার্তায় উল্লেখ করেছে—২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি বা তার পর যে-সব ব্যক্তি গাজা ভ্রমণ করেছেন, তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখতে হবে। বার্তাটি প্রথম হাতে পেয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

এই যাচাই-বাছাইয়ের আওতায় পড়বেন ভিসা আবেদনকারী সকল ব্যক্তি—হোক তারা সরকারি, কূটনৈতিক কিংবা বেসরকারি সংস্থার কর্মী। গাজায় তারা অল্প সময়ের জন্য গেলেও তা হিসাবের বাইরে নয়।

যদি কোনো আবেদনকারীর পোস্ট, মন্তব্য বা কার্যকলাপে যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা পররাষ্ট্রনীতির জন্য ‘সন্দেহজনক বা ক্ষতিকর’ কিছু পাওয়া যায়, তাহলে তাকে ‘সিকিউরিটি অ্যাডভাইজরি ওপিনিয়ন’ বা এসএও দাখিল করতে হবে। এই এসএও হলো এক ধরনের আন্তঃসংস্থাগত তদন্ত যার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি করছেন কিনা।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আগে প্রত্যেক আবেদনকারীকে নিরাপত্তাজনিত কঠোর পর্যবেক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়—এমনটাই জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানান, নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের দায়িত্ব।

তবে বিষয়টি নিয়ে তিনি বিস্তারিত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় থেকেই অভিবাসন ও ভিসা নীতিতে কঠোরতা আরোপ শুরু হয়। ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইন অনুসারে, যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মনে করেন কোনো ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর, তবে তার ভিসা বাতিল বা মার্কিন ভূখণ্ড থেকে বহিষ্কারের অধিকার সংরক্ষিত থাকে।

এমনকি মার্কিন স্থায়ী বাসিন্দা হয়েও কেউ ওই আইনের আওতায় ভিসা বাতিলের শিকার হতে পারেন—যেমনটা অতীতে ঘটেছে।

রয়টার্স বলছে, এই সাম্প্রতিক তারবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও স্বাক্ষর করেছেন, যা বিষয়টির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

এদিকে, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যারা ফিলিস্তিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যেই তাদের মধ্যে অনেককে শিক্ষার্থী ভিসা থাকা সত্ত্বেও ফেরত পাঠিয়েছে, এমনকি কেউ কেউ আটকও হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেছেন দেশটির নাগরিক অধিকার সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠন ও আইনজীবীরা। তারা বলছেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর এটি সরাসরি হস্তক্ষেপ। কেউ যদি মানবিক কারণে ফিলিস্তিনের পক্ষে কথা বলেন, সেটিকে রাষ্ট্রীয় হুমকি হিসেবে দেখা গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থি।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।