আগামী ১লা মে আন্তর্জাতিক মহান শ্রমিক দিবস উপলক্ষে ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউন করতে চায় বিএনপি। ওইদিন দলটির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে ঢাকাসহ দেশের বিভাগীয় ও জেলা শহরে সমাবেশের আয়োজন করা হবে।
মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের সমন্বয়ে এক যৌথসভা শেষে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। এরআগে বিকেল ৩টায় রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ১লা মে মহান শ্রমিক দিবস। এমনই এক দিনে স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ঘোষণা করেছিলেন যে, আমিই একজন শ্রমিক এবং এই পরিচয়ে আমি গর্বিত। তার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল মহান মে দিবস উপলেক্ষ্যে ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটি ও ঢাকা মহানগর উত্তর দক্ষিণের উদ্যোগে কয়েকটি প্রস্তুতি মিটিং হয়েছে। উপকমিটিও গঠন করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির মহাসচিবের উপস্থিতিতে অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আরও আলোচনা করেছি। কীভাবে সমাবেশ শান্তিপূর্ণ করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যাশা করছি, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের লড়াইয়ের প্রথম বিজয়ের দিন মহান মে দিবস। এই দিবসটি আমরা যথাযথভাবে পালন করতে পারবো। এই সমাবেশে ঢাকা মহানগরসহ পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত হবেন। এক্ষেত্রে গণমাধ্যমের সহযোগিতাও কামনা করছি। এছাড়াও দেশের সকল মহানগর বা বিভাগ ও জেলায় যার যার উদ্যোগে শ্রমিক দলের কমিটিগুলো মহান মে দিবস পালন করবেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, মহান মে দিবসে আমরা বিশাল সমাবেশ করতে চাই। দিনটি সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় আমরা আশা করছি জনদুর্ভোগ কম হবে। বেলা ২ টায় সমাবেশ শুরু হবে। আমরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধান অতিথি করার চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু তিনি খুব সুস্থ নন। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি থাকবেন। পাশাপাশি দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষ খুব শান্তিতে নাই। কারণ আমরা আজও বাংলাদেশে আমরা শ্রমজীবী মানুষের জন্য জাতীয় ন্যূনতম মজুরি আদায় করতে পারি নাই। মহান মে দিবসের মূল দাবি ছিল দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ এবং এই দাবির বিজয়ের যে লড়াই ছিল মে দিবসের লড়াই। এর বিজয় লাভ সত্ত্বেও আজও সব শ্রমিক ৮ ঘন্টা কাজের অধিকার পেয়েছে এটা বলা যায় না। ব্রিটিশ-ভারতে আমলে ভারতবর্ষ একটা ডোমিনিয়নের মর্যাদায় আইএলও’র সদস্য ছিল এবং এই প্রথম ওয়াশিংটন কনভেনশনর অনুমোদন করে।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, আজকে অনেক শিল্প-কারখানায় দৈনিক আট ঘণ্টারও বেশি কাজ করা হয়, অনেক ক্ষেত্রে বিনা বেতনে। কাজেই শ্রমিকদের অন্যান্য যেসব দাবি স্বাধীনভাবে সংগঠন করা, স্বাধীনভাবে দর কষাকষি করার অধিকার ও তার ন্যায্য মজুরির অধিকারের পাশাপাশি মে দিবসের মূল দাবি দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের দাবি আদায়ের বিষয়টাকে সামনে রেখেই এবার মে দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
সাবেক এই রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল শ্রমজীবী মানুষের কতগুলো মৌলিক দাবি জনগণের সামনে উত্থাপন করবে। গণমাধ্যমে এসবের যথাযথ প্রচার হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
যৌথসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির শ্রম বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম, মো. ফিরোজ উজ্জামান মামুন মোল্লা, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না, সেক্রেটারি নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহম্মেদ, জাসাসের হেলাল খান, শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, মহানগর দক্ষিণের সুমন ভুইয়া ও বদরুল আলম সবুজ, ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্যামল মালুম প্রমুখ।