সারাদেশ

কৌশলে বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নাম ছড়াচ্ছে আ.লীগের দোসররা

কৌশলে বিএনপির বিরুদ্ধে দুর্নাম ছড়াচ্ছে আ.লীগের দোসররা


আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নানাভাবে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে বিএনপির নেতাকর্মীদের নামের দুর্নাম ছড়াচ্ছে। পাশাপাশাই বিভিন্ন গল্প সাজিয়ে মিডিয়ার সামনে কারসাজি করা তথ্য উপস্থাপন করে মিডিয়া ট্রায়েলে বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মাসফিয়ার রহমান সবুজ।

তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পাইকগাছা উপজেলার অধিকাংশ মৎস্য ঘের নিজেদের দখলে রেখেছিল। কোনো জমির মালিককে তারা খাজনা পরিশোধ করতো না। জোর জুলুম করে দখল করে মাছ চাষ করত। স্থানীয় থানা পুলিশ ও সংসদ সদস্যরা জড়িত থাকায় দরিদ্র জমির মালিকরা কখনো ন্যায়বিচার পাননি। গত ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার হাত ধরে এক নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। এখন মানুষ তাদের অধিকার ফিরে পাচ্ছে। পাইকগাছার জমির মালিকরা তাদের জমি আওয়ামী লীগের দোসরদের হাত থেকে উদ্ধার করে অন্যত্র ইজারা দিতে পারছে। তবে এতে থেমে নেই আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও তাদের দোসররা। নানা কৌশলে এখনো গরিব মানুষকে হয়রানি ও জমি দখলে রাখার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।

উদাহরণ হিসেবে তিনি আরও বলেন, গত ২০ এপ্রিল সংবাদ সম্মেলন করেছে পাইকগাছার দেলুটি ইউনিয়নের দিঘলিয়া গ্রামের মৃত নিরোদ সরদারের পুত্র সত্যজিৎ সরদার। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে এবং আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জমির মালিকদের ঠকিয়ে ঘের দখলে চেষ্টা করতে সে স্থানীয় বিএনপির নামে দুর্নাম করেছে।

মাসফিয়ার রহমান সবুজ বলেন, পাইকগাছার এলাকাধীন মৌজা ১৬৮ নম্বর লতাপুতলাখালীতে মাছের ঘের আছে। আবার বাবা মরহুম ফসিয়ার রহমান ৫টি দলিলমূলে ৩০ বছর ঘের করেন। পরবর্তীতে তার মৃত্যুর পর তারই সন্তান আমি ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি হতে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৫ বছর মেয়াদে ইজারা নিই। ২০২৩ রেজিস্ট্রি অফিসের মাধ্যমে শিবপদ সরদারকে পার্টনারশিপ দলিল দেন, যার অংশ থাকে ৫০ শতাংশ। কিন্তু ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ক্ষমতা প্রভাব খাটিয়ে তৎকালীন সংসদ সদস্য মো. আখতারুজ্জামান বাবু ও মো. রশিদুজ্জামানের ভয় দেখিয়ে বাকি অর্ধেকের ৪৯ অংশ জোরপূর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর আমি ১২ নভেম্বর নোটারি দলিলের বিরুদ্ধে (সত্যজিৎ) সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছিলাম।

তিনি বলেন, এ ছাড়া প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে আদালতে মামলা করা সত্ত্বেও নিজের পক্ষে রায় আনতে ব্যর্থ হয়ে তিনি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বক্তব্য দিয়েছে। পাশাপাশি পাইকগাছার সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং বিজ্ঞ জেলা দায়রা জজ আদালতে মামলার বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রেখে বিএনপি নেতা ও আমার চাচা এস এম এনামুল হক ও আসলাম পারভেজকে জড়িয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়েছেন। সত্যজিৎ এর দাবিকৃত ঘেরে ডিড ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে, পরবর্তীতে জমির মালিকরা পূর্বের ন্যায় আমাকে ডিড করে দেন।

এ ঘেরে বছরের অর্ধেক সময় মাছ ও পরবর্তীতে ধান চাষ হয়। মাছের লভ্যাংশ ঘের মালিকের এবং পরবর্তী ধান চাষের সম্পূর্ণ ফসল জমির মালিকরা ভোগ দখল করে থাকেন। যেটা আওয়ামী লীগের আমলে সম্ভব ছিল না। এ ছাড়া ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য এস এম এনামূল হক, আসলাম পারভেজ, মো. ইমরান সরদার, মো. ইব্রাহিম গাজী নাম উল্লেখসহ ১২ এবং অজ্ঞাত ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। এই মামলায় বিএনপির বিভিন্ন স্তরের নেতাসহ জমির মালিকদের বিবাদী করা হয়েছে।

সবুজ বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা সন্ত্রাসী সত্যজিৎ সরদার দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে মিথ্যা বানোয়াট বক্তব্য দিয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের শীর্ষ সন্ত্রাসী মৃণালের অন্যতম সহযোগী সত্যজিৎ সরদার নিজেই বাদী হয়ে পৃথক দুটি আদালতে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকা অবস্থায় মিথ্যা ঘটনা উপস্থাপন করে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার জন্য নানা কাল্পনিক কাহিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রায় ৩০ জন জমির মালিক উপস্থিত ছিলেন।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।