সারাদেশ

বন্ধ হলো বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের ভিটেবাড়ি দখলের নির্মাণ কাজ

বন্ধ হলো বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের ভিটেবাড়ি দখলের নির্মাণ কাজ


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের কালিকচ্ছ গ্রামে অবস্থিত ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক বিপ্লবী উল্লাসকর দত্তের জন্মভিটা আবারও বেদখলের মুখে। যে বাড়িতে বাংলার এক সুসজ্জিত বিপ্লবীর আদর্শ গড়ে উঠেছিল—সেই বাঘবাড়ির উঠানে এখন গাঁথা হচ্ছে কংক্রিটের পিলার।

এ বাড়িটি শুধু একটি স্থাপনা নয়, এটি একটি অগ্নিযুগের প্রতীক, একটি জাতির আত্মপরিচয়ের স্মারক। স্থানীয় উদীচীসহ সাংস্কৃতিক কর্মীদের প্রতিরোধের ফলে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর বাড়িটিকে গেজেটভুক্ত করে সংরক্ষণের ঘোষণা দেয় এবং সেখানে সরকারিভাবে সাইনবোর্ড স্থাপন করা হয়। কিন্তু গত ৫ আগস্ট, নতুন সরকার গঠনের পরদিন, রাতারাতি সরিয়ে ফেলা হয় সেই সাইনবোর্ড।

সরেজমিন দেখা গেছে, ঐতিহাসিক বাড়ির উঠানে স্থাপনা নির্মাণের প্রস্তুতি চলছে। এ ব্যাপারে দখলে অভিযুক্ত স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আহামেদ আলীর ছেলে শেখ আতাউর দাবি করে বলেন, ভারত থেকে আসা উল্লাসকর দত্তের বাবার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে শিবু দত্তের কাছ থেকে বাড়িটি আমরা ক্রয় করেছি। আমাদের কাছে সব পত্র আছে। তিনি জায়গা বুঝে না পেলে সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করবেন বলে জানিয়েছেন।

জানা যায়, এর মধ্যে অর্ধেক উল্লাসকর দত্তের বাবা দ্বিজদাশ দত্ত পাবেন। উল্লাসকর দত্তের কোনো ভাইবোন না থাকায় ওই সম্পত্তির মালিক উল্লাসকর দত্ত। উল্লাসকর দত্তের কোনো ছেলেমেয়ে না থাকায় এবং তিনি ১৯৬৫ সালের আগেই দেশত্যাগ করায় এ সম্পত্তি সরকারের সম্পত্তি হিসেবে গণ্য হবে। এ ছাড়া উল্লাসকর দত্তের চাচাতো ভাইয়ের কোনো সন্তান না থাকায় পুরো জায়গাটি সরকারি সম্পত্তি। ১৯৬৮ সালের ১৪ নম্বর ‘পুরাকীর্তি সংরক্ষণ আইন’-এর ১১ ধারা অনুযায়ী, প্রত্নসম্পদ ধ্বংস বা বিকৃতি করলে জেল, জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।

সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসাইন সোমবার বিকেলে উল্লাসকর দত্তের ভিটেবাড়ি রক্ষার জন্য সরাসরি বাধা প্রদান করেন। কাজ বন্ধ করে দিয়ে আসেন।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সাইনবোর্ড ওপরে ফেলে এখানে স্থাপনা তৈরি করা গুরুতর অপরাধ। এখানে অবৈধ নির্মাণসামগ্রীর একটি ইটের কণাও থাকতে দেব না, তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন কবি ও সাহিত্যিক জয়দুল হোসেন, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ, সরাইল উদীচীর সভাপতি মোজাম্মেল পাঠান, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কবি তালুকদার আবুল কাশেম, শাহিনুল মৃধা প্রমুখ।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।