নারীর জীবনের গোপন বেদনা, সমাজের নীরব উপেক্ষা আর হৃদয়ের অব্যক্ত প্রতিবাদ নিয়ে নির্মিত হয়েছে শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটারের নতুন নাটক ‘গোধূলিবেলায়’। শূন্যন এবার দর্শকদের নিয়ে যেতে চায় এক গোধূলিলগ্নের অন্তর্মুখী যাত্রায়।
নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে ২৯ জুন সন্ধ্যা ৭টায় নিউইয়র্কের জামাইকা আর্টস সেন্টারে। এরপর আরও দুটি প্রদর্শনী হবে ৬ জুলাই নিউজার্সিতে এবং ১২ জুলাই লং আইল্যান্ডে।
এক নারীর জীবনের গল্প ‘গোধূলিবেলায়’ নাটকে দেখা যাবে- এক বৃদ্ধা মা পঞ্চাশতম বিবাহবার্ষিকীর দিনে ফিরে যান তাঁর স্মৃতির ভেতর, যেখানে ধরা পড়ে এক নারীর গোপন যন্ত্রণা, হাহাকার আর চাপা কান্নার কাহিনি। সংসার, প্রেম আর মাতৃত্বের আড়ালে ঢাকা পড়ে থাকা নারী-অস্তিত্বের তীব্র ভাষ্য ফুটে ওঠে এই নাটকে।
এই একক নাটকে অভিনয় করেছেন গুণী অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী, যিনি একইসঙ্গে নাটকের নাট্যকার ও প্রযোজক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্দেশনায় রয়েছেন শামীম সাগর। এছাড়া নাটকটিতে শব্দ, আলো, নীরবতা ও প্রতীকী বিমূর্ততার মাধ্যমে নির্মিত হয়েছে এক অনন্য দৃশ্যকবিতা, যা দর্শকদের আবেগের গভীরে আলোড়ন তুলবে। আলোক পরিকল্পনায় আছেন ঠাণ্ডু রায়হান, আলোক প্রক্ষেপক বাবর খাদেমী, সংগীত প্রক্ষেপক সিফাত উদ্দিন পলক, কোরিওগ্রাফি, প্রপস ও পোশাকে মোমেনা চৌধুরী, পোস্টার পরিকল্পনায় শামীম সাগর, প্রযোজনা অধিকর্তা মোমেনা চৌধুরী ও সার্বিক সহযোগিতায় কৃষ্টি (জ্যামাইকা, নিউইয়র্ক) ও আরণ্যক (বাংলাদেশ)।
নাটক সম্পর্কে নাটকটির নাট্যকার ও অভিনেত্রী মোমেনা চৌধুরী বলেন, “নারীকে ঘিরে থাকা শরীর, সম্মান, স্বপ্ন এবং অপমান- এই নাটক এগুলোকে সামনে এনে আমাদের অন্তরে ছুড়ে দেয় প্রশ্ন। যদি এটি কাউকে তার নীরব প্রতিবাদের ভাষা দিতে পারে, সেটাই আমার সবচেয়ে বড় সাফল্য।”
নির্দেশক শামীম সাগরের মতে, “এখানে আমি শুধু এক নারীর কাহিনি বলিনি, বরং ন্যায়ের অভাব আর সমাজের নীরবতার বিরুদ্ধে এক প্রতীকী প্রতিবাদ তুলে ধরেছি।”
২০১১ সালে মোমেনা চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত শূন্যন রেপার্টরি থিয়েটার শুরু থেকেই নারী অধিকার, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবিক মূল্যবোধকে কেন্দ্র করে নাট্যচর্চায় নিবেদিত। ‘গোধূলিবেলায়’ সেই ধারারই নতুন সংযোজন- এক নারী জীবনের নিঃশব্দ অথচ তীব্র প্রতিবাদের সৃজনশীল রূপান্তর। শূন্যনের পূর্ববর্তী প্রযোজনাগুলো হলো : লালজমিন, রঙিন চরকি, আত্মজয় ও মৃত্যু মৃত্যু খেলা।