চব্বিশের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোর বিরোধিতাকারী সিদ্ধেশ্বরী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শেখ জুলহাস উদ্দিনকে এবার দেখা গেছে শহীদ স্মরণে আয়োজিত আলোচনা ও দোয়া সভার সভাপতির আসনে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) কলেজে এই স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী ও সচেতন মহলে প্রশ্ন ও ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলন দমনে তিনি শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে একাধিক বৈঠকে অংশ নেন। বিশেষ করে গত বছরের ৩ আগস্ট গণভবনে ডাকা শেখ হাসিনার বৈঠকে তার অংশগ্রহণের ভিডিও প্রকাশ হয় ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়। আন্দোলন রুখতে তিনি মোটা অঙ্কের অর্থ সরবরাহ করেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি দেখান বলেও অভিযোগ রয়েছে।
শেখ জুলহাস দীর্ঘদিন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক সংগঠন ‘বাকশিস’র আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠতার সুযোগে ২০১৮ সালে তিনি অধ্যক্ষের পদে আসেন।
শিক্ষার্থীদের দাবি, কলেজকে তিনি আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করেন। নির্বাচনকালীন দলীয় প্রচারণার কাজে কলেজ ব্যবহারের ঘটনাও রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘তিনি (শেখ জুলহাস উদ্দিন) নিজেকে শেখ হাসিনার লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে কলেজে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছিলেন।’
শুধু তাই নয়, একাধিক নারী শিক্ষককে কুপ্রস্তাব দেওয়া, অনৈতিক সম্পর্কে জড়ানো এবং অস্বীকৃতি জানানোয় বরখাস্ত করার অভিযোগও এসেছে। এসব ঘটনায় তার ভাই ও আত্মীয়দের জড়িত থাকার তথ্য রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই থেকে শিক্ষার্থীরা কলেজসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে পোস্টার ও ব্যানারের মাধ্যমে তার অপসারণের দাবিতে সরব হয়েছে। পোস্টারে লেখা ছিল, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান দমনকারী অধ্যক্ষ জুলহাসের অপসারণ চাই।’
প্রশ্ন উঠেছে, এত অভিযোগ সত্ত্বেও তিনি কীভাবে বহাল থাকেন? শিক্ষার্থীরা বলছে, ‘এটা প্রমাণ করে প্রশাসনের ভেতর এখনো একটি আওয়ামী প্রভাবশালী চক্র সক্রিয়।’
আন্দোলন শুধু শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, প্রগতিশীল ছাত্র জোট, শিক্ষক ফোরাম ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও তার অপসারণের দাবিতে মাঠে নেমেছে।