দক্ষিণের বৃহৎ মৎস্য বন্দর পটুয়াখালীর মহিপুরে ইলিশ সংরক্ষণের অন্যতম উপকরণ বরফ সংকট দেখা দিয়েছে। উৎপাদনের চেয়ে বাড়তি চাহিদা থাকায় এমন সংকট তৈরি হয়েছে। যা ইতোমধ্যে ১৫০ টাকার প্রতি ক্যান বরফ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকায়। ফলে এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে গোটা বন্দরজুড়ে।
মৎস্য সংশ্লিষ্টরা জানান, গত সোমবার থেকে বরফ উৎপাদনে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ফলে এমন অবস্থা বিরাজমান থাকায় সাগরে যেতে পারছে না জেলেরা। তবে মৎস্য আড়ত মালিকদের অনেকে আবার লোডশেডিংয়ের কারণে বরফ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন।
মৎস্যবন্দর মহিপুর মৎস্য ব্যবসায়ীরা বলেন, আলীপুর-মহিপুর এলাকায় অন্তত ৩০টি বরফ কল রয়েছে। এসব বরফ কলের কোনোটিতে প্রতিদিন ২০/২৫টি আবার কোনোটিতে ২০০ ক্যান বরফ উৎপাদন করা সম্ভব।
তবে গত তিনদিনের বৈরী আবহাওয়ায় সাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। এতে অন্তত সহস্রাধিক ট্রলার নিরাপদ স্থানে খাপড়াভাঙ্গার খালসহ বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে। আর এসব ট্রলারের মাছ সংরক্ষণে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ট্রাকযোগে মাছ সরবরাহ করতে যে পরিমাণ বরফের প্রয়োজন তা স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হচ্ছে না। তাই এমন সংকট দেখা দিয়েছে। এতে খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী থেকে চড়া দামে বরফ কিনে আনছেন ব্যবসায়ীরা।
জেলে সোবাহান, ছালাম ও নজিরসহ একাধিক জেলেদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, বরফ সংকটে ট্রলারসহ অনেক জেলেরা সাগরে যেতে পারছে না। ঘাটে জেলেরা শুধু বরফের অপেক্ষায় মুখিয়ে আছেন।
এ বিষয়ে আলীপুর-মহিপুর মৎস্য আড়তদার সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি ও মহিপুর ইউপির চেয়ারম্যান ফজলু গাজী কালবেলাকে বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে হঠাৎ শতশত ট্রলার মহিপুর, আলীপুর ঘাটে নোঙর করায় বরফের চাহিদা বেড়ে গেছে। তবে সংকটের কারণেই বরফ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সহা বলেন, হঠাৎ বরফ সংকটে জেলেদের সাগরযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণেও বরফ উৎপাদনে ঘাটতি থাকতে পারে। তবে বিষয়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ, আমরা সব ধরনের খোঁজখবর নিচ্ছি।
কুয়াকাটা পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম মো. সিফাতুল্লাহ বলেন, বিদ্যুৎ সংকটে বরফ উৎপাদনে সমস্যা হচ্ছে, তা আমি দেখছি না। কারও বরফকলে বিদ্যুৎ সমস্যা হচ্ছে তাও কেউ কখনো আমাদের জানায়নি।