বিশ্ব

সাসটেইনেবল সিটি : বিশ্বের কোন কোন শহর এগিয়ে

সাসটেইনেবল সিটি : বিশ্বের কোন কোন শহর এগিয়ে


বিশ্বের দ্রুত বর্ধনশীল জনসংখ্যা ও নগরায়ণের চাপ বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে সাসটেইনেবল সিটি বা টেকসই নগর পরিকল্পনা এখন অত্যন্ত জরুরি। টেকসই শহর মানে এমন শহর যেখানে পরিবেশ, অর্থনীতি ও সামাজিক ন্যায়বিচার—সব কিছুর মধ্যে ভারসাম্য রাখা হয়। কার্বন নিঃসরণ কমানো, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার, সবুজ অবকাঠামো, গণপরিবহন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও নির্মল বায়ু, বিশুদ্ধ পানি—এসব সূচক মেপেই টেকসই শহরের মানদণ্ড নির্ধারিত হয়।



সাম্প্রতিক সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ পাঁচটি টেকসই শহর হলো—কোপেনহেগেন, আমস্টারডাম, স্টকহোম, সিঙ্গাপুর ও ভ্যাঙ্কুভার।

কোপেনহেগেন, ডেনমার্ক

ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেন ২০২৫ সালের মধ্যেই বিশ্বে প্রথম কার্বন-নিরপেক্ষ শহর হওয়ার দৌড়ে রয়েছে। শহরটিতে ৯০ শতাংশেরও বেশি পরিবার জেলা-হিটিং সিস্টেমের মাধ্যমে বিদ্যুৎ পাচ্ছে। শহরে সাইকেল অবকাঠামো এতটাই উন্নত যে, অর্ধেকেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন সাইকেলে যাতায়াত করেন।

আমস্টারডাম, নেদারল্যান্ডস


ঐতিহাসিক সৌন্দর্য আর আধুনিক উদ্ভাবনের মিশেলেই আমস্টারডাম টেকসই শহরের তালিকায় শীর্ষে। শহরের ৭৫ শতাংশ যাতায়াত হয় সাইকেল ও গণপরিবহনে। শহরটিতে ২০২৫ সালের মধ্যে সব বাস বিদ্যুৎচালিত করার পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি খালগুলোতে ভাসমান বাগান ও সৌরশক্তিচালিত হাউসবোট পরিবেশবান্ধব দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছে।

স্টকহোম, সুইডেন


সুইডেনের রাজধানী স্টকহোম ২০৪০ সালের মধ্যে পুরোপুরিভাবে জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত হওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে এখানে যানজট কমাতে কনজেশন চার্জ চালু রয়েছে। বর্জ্য থেকে জৈব জ্বালানি তৈরি করে শহরের গণপরিবহনে ব্যবহার করা হয়।

সিঙ্গাপুর


অত্যধিক জনবসতিপূর্ণ সিঙ্গাপুর টেকসই নগরায়ণের চমৎকার উদাহরণ। শহরে ৭২ হেক্টরের বেশি ভার্টিক্যাল বাগান রয়েছে। নিউওয়াটার প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্ব্যবহারযোগ্য পানি শহরের মোট চাহিদার ৪০ শতাংশ পূরণ করে। ২০৩০ সালের মধ্যে সৌরশক্তির মাধ্যমে সাড়ে তিন লাখ বাড়িকে বিদ্যুৎ দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে।

ভ্যাঙ্কুভার, কানাডা


উত্তর আমেরিকার মধ্যে ভ্যাঙ্কুভারকে সবচেয়ে টেকসই শহর হিসেবে ধরা হয়। বর্তমানে শহরের ৯৫ শতাংশ বিদ্যুৎ আসে জলবিদ্যুৎ থেকে। ‘জিরো-ওয়েস্ট’ নীতি অনুসরণ করে শহরটি ৭০ শতাংশ বর্জ্য পুনর্ব্যবহার করছে। ২০৫০ সালের মধ্যে সম্পূর্ণ নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে রূপান্তরের লক্ষ্য রয়েছে।

বিশ্বের এই শীর্ষ শহরগুলো প্রমাণ করে, সঠিক পরিকল্পনা, নাগরিক অংশগ্রহণ ও প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার হলে নগরায়ণ ও টেকসই উন্নয়ন একসঙ্গে সম্ভব।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।