শরীয়তপুরের জাজিরায় পুলিশের মাসিক ভোজসভা এখন তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ, পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ডাইনিং রুমে অনুষ্ঠিত ওই ভোজের আয়োজক ছিলেন থানার ওসি পারভেজ আহমেদ সেলিম নিজেই। অথচ সেই ভোজের টেবিলে বসেছেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন নাওডোবা ইউনিয়নের যুবলীগের সভাপতি মোক্তার বেপারী।
এতে প্রশ্ন উঠছে— এ আয়োজন কি কেবল ভোজ ছিল, নাকি রাজনৈতিক পক্ষপাতের প্রকাশ? যদিও বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভেতরেই এ ভোজসভা বসে।
থানা সূত্রেই নিশ্চিত হওয়া গেছে, প্রতিমাসেই এ ধরনের ভোজের উদ্যোগ নেন ওসি। এবারও তার ব্যবস্থাপনাতেই ভোজসভা হয়। উপস্থিত ছিলেন থানার সদস্য, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ বেশ কয়েকজন বিশেষ অতিথি। কিন্তু সেই টেবিলে হঠাৎই দেখা যায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ যুবলীগ নেতা মোক্তার বেপারীকে।
এ বিষয়ে নাওডোবা ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক হাজী আলমগীর হোসেন সরদার বলেন, এখানে সবই হয়েছে ওসির আমন্ত্রণে। আমাকেও ওসি দাওয়াত দিয়েছেন, তাই আমি গিয়েছি। কিন্তু নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকে থানার ভেতর সরকারি ভোজে বসানোটা আসলে পুলিশের নিরপেক্ষতাকে কলঙ্কিত করেছে।
অভিযোগ ওঠার পরও দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ওসি পারভেজ আহমেদ সেলিম। তিনি কালবেলাকে বলেন, আমরা থানা থেকে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম। সেখানে আমাদের পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সার্কেল স্যারও ছিলেন। আমি ওনাকে (মোক্তার বেপারী) চিনতাম না। পরে শুনেছি ওনি উপস্থিত ছিলেন। আমি জানলে তাকে অ্যালাউ করতাম না।
তবে স্থানীয়দের দাবি, ওসির আয়োজনে ভোজসভায় কারা বসবে তা তিনি জানেন না— এটা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ওসির সরাসরি ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত ভোজসভায় নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতার উপস্থিতি শুধু পুলিশের ভাবমূর্তিই প্রশ্নবিদ্ধ করছে না, বরং থানার শীর্ষ কর্মকর্তার নিরপেক্ষতা নিয়েও জনগণের মনে গুরুতর সংশয় তৈরি করেছে।
জানতে চাইলে এ ব্যাপারে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নড়িয়া সার্কেল) ড. আশিক মাহমুদ কালবেলাকে জানান, মাসিক ভোজের আয়োজন ছিল পদ্মা থানায়। যুবলীগ নেতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন— এ ব্যাপারে আমি জানতাম না। তবে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখব।