যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর যমুনা সড়ক সেতুর ওপর নির্মিত পরিত্যক্ত রেলসেতুর রেললাইন খুলে ফেলার কাজ শুরু করছে কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) টাঙ্গাইল জেলার ভূয়াপুর প্রান্ত থেকে সেতুর রেললাইনের নাট-বল্টু খোলার কাজ শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও যমুনা রেলসেতুর প্রকল্প পরিচালক আল ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান কালবেলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ১৮ মার্চ যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পর সড়ক সেতুর পাশের রেলসেতুটিতে দিয়ে আর ট্রেন চলাচল করছে না। ফলে ওই রেললাইনের আর প্রয়োজনীয়তা নেই। এ জন্য সেতুর রেললাইন খুলে ফেলা হচ্ছে।
যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবির পাভেল কালবেলাকে বলেন, রেলওয়ে তাদের ট্র্যাকগুলো খুলে নিচ্ছে। আমাদের পরিকল্পনা আছে সড়ক সেতুকে প্রশস্ত করা হবে। সড়ক সেতুর পাশে রেললাইন অপসারণ হলে সড়ক সেতুতে আরও সাড়ে ৩ মিটার বাড়বে। আমরা সাড়ে তিন মিটার মূল সড়ক সেতুর সাথে সংযোগ করব। এতে উভয় লেনে ১ দশমিক ৭৫ মিটার বাড়বে।
তিনি বলেন, বর্তমানে সেতুর প্রতি লেনের প্রশস্ততা রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিটার। অথচ আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড হলো ৭ দশমিক ৩ মিটার। এ কারণেই যানজট আর দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। রেললাইন অপসারণের পর প্রতি লেন ৮ মিটার প্রশস্ত হবে বলে জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে। প্রকল্পের মাধ্যমে এটি বাস্তবায়ন করতে হবে।
জানা যায়, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা সেতুটি উদ্বোধন হলেও সেখানে কোনো রেলপথ ছিল না। পরবর্তীতে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে ওই সেতুর উপর উত্তরপাশে লোহার এঙ্গেল দিয়ে তৈরি করা হয় রেলসেতু। ২০০৪ সালের ১৫ আগস্ট যমুনা সেতুতে আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হয়। দ্রুত গতিতে ট্রেন চলার কারণে ২০০৬ সালে সেতুতে ফাটল ধরে। পরে ট্রেন চলাচলের গতিসীমা করা হয় ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটার। এতে একটি ট্রেনকে সেতু পার হতে ২২ মিনিট সময় লাগে। এ কারণে সেতুর দুই প্রান্তে ট্রেনের জট বেঁধে যায়।
এ সমস্যা সমাধানে ২০২০ সালের ৩ মার্চ যমুনা নদীর ওপর উজানে আলাদা রেল সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই বছর ২৯ নভেম্বর রেলসেতুটি নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। এরপর ২০২১ সালের মার্চে যমুনা সেতুর ৩শ মিটার উজানে রেলসেতুর পিলার নির্মাণে পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়।
১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত রেলসেতুটি গত ১৮ মার্চ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকেই মূল সড়ক সেতুর উপর রেললাইন খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয় রেল কর্তৃপক্ষ।