সারাদেশ

আন্দোলনের মুখে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক টিপু

আন্দোলনের মুখে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক টিপু


সাংবাদিকদের জোর আন্দোলনে মুখে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন কালের কণ্ঠের সাতক্ষীরার তালা উপজেলা প্রতিনিধি রোকনুজ্জামান টিপু।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকাল থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের টানা আন্দোলন, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচির থেকে দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে করা আপিলের প্রেক্ষিতে তাকে জামিন দেওয়া হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে তাকে সাতক্ষীরা জেলা কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।

সাতক্ষীরা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুকে শাস্তি দেওয়ার ঘটনায় সাংবাদিক মহলে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এর প্রতিবাদে বুধবার ঢাকা, সাতক্ষীরা ও তালায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়। সর্বশেষ আজ বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরায় সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচির থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে করা আপিলের প্রেক্ষিতে তাকে জামিন দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, সংবাদের স্বাধীনতা গণতন্ত্রের প্রধান স্তম্ভ। একজন সাংবাদিক অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে যদি তাকে কারাগারে পাঠানো হয়, তাহলে সেটি গোটা সমাজের জন্য হুমকি। টিপুর জামিন সাংবাদিক সমাজের সম্মিলিত ঐক্যের ফল। আমরা চাই, কোনো সংবাদকর্মী যেন আর এভাবে নিপীড়নের শিকার না হন। প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপের জন্য আমরা সাংবাদিক সমাজের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।

সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) রিপন বিশ্বাস জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর পক্ষে অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান আপিল করার পাশাপাশি জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ওই আবেদন মঞ্জুর করা হয়।

এদিকে, মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচিতে দৈনিক দক্ষিণের মশালের সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক ই-এলাহীর সভাপতিত্বে ও আবুল কাসেমের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক কল্যাণ ব্যানার্জি, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অ্যাড. আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি আবু জাফর, নিউজ টোয়েন্টিফোর ও বাংলাদেশ প্রতিদিন সাংবাদিক মনিরুল ইসলাম মনি প্রমুখ।

সাংবাদিক টিপু সুলতান বলেন, কাজের মান খারাপ হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আমি সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এসময় উপসহকারী প্রকৌশলী এমএম মামুন আলম আমাকে কোনো প্রকার সহযোগিতা না করে তার ছাতা দিয়ে মারতে শুরু করে। আমি তাকে প্রতিরোধ করতে গেলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিজেদের অনিয়ম ঢাকতে ইউএনও আমাকে ১০ দিনের জেল ও ২শ টাকা জরিমানা করেন।

তিনি বলেন, সারাদেশের সাংবাদিক সমাজের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আমার মুক্তি হয়েছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে আমার কলম চলবে।

এর আগে গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে তালা উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের ৯ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহ করতে যান সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপু। এসময় তালা উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী এমএম মামুন আলম তথ্য দিতে অস্বীকার করায় সাংবাদিকের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সাংবাদিককে তথ্য জানার কে এমন প্রশ্ন করলে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেলকে জানালে তিনি সরেজমিনে উপস্থিত শ্রমিকসহ স্থানীয়দের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সাংবাদিক টিপুকে ১৭৬ ধারায় ১০ দিনের সাজা দেন এবং ২০০ টাকা জরিমানা করেন। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা তীব্র নিন্দা জানিয়ে সাংবাদিক রোকনুজ্জামান টিপুর নিঃস্বার্থ মুক্তি দাবি করেন।এবং ইউএনও’র অপ্রসারণ দাবি করেন।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।