এক রাতেই খুলনায় আলাদা ঘটনায় খুন হয়েছেন দুজন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুজন। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাতে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটে।
মাদক সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণ নিতে এসব খুন বলে দাবি প্রশাসনের। তবে এক রাতে অপরাধীদের নৃশংসতার এমন ঘটনায় নাগরিকদের উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা যায়, জেলার রূপসা উপজেলায় সন্ত্রাসীর গুলিতে এক যুবক নিহত এবং দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার রাজাপুর গ্রামের পপুলার এলাকার সন্ত্রাসী সাব্বির (২৭) নামের এক যুবক গুলিতে নিহত হন। এ সময় আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ সাদ্দাম নামে এক যুবককে আশঙ্কাজনক হওয়ায় উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়। সকালে তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লেও এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে একটি সূত্র জানায়, গুলিবিদ্ধ সাদ্দাম ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রয়েছে। ওই ঘটনায় মিরাজ নামে গুলিবিদ্ধ আরেক যুবক পালিয়ে গেছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) ভোরে রূপসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বলেন, খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট বি কোম্পানির প্রধান গ্রেনেড বাবু তার প্রধান দুই সহযোগী কাউয়া মিরাজ এবং সাব্বির। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার সময় অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে রূপসা থানাধীন আইচঘাতী ইউনিয়নের রাজাপুর এলাকায় শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী সোহাগের বাড়িতে গোলাগুলি করে। ঘটনাস্থলে সাব্বির মৃত্যুবরণ করে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আহত কাওয়া মিরাজ একটি প্রাইভেট ক্লিনিক নার্গিস মেমোরিয়াল ক্লিনিকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চিকিৎসা নিয়ে পালিয়ে যান। তাদের অপর সহযোগী সাদ্দাম মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হলে সেখান থেকে ঢাকায় রেফার করা হয়।
ঘটনাস্থল থেকে মরদেহের পাশে ছয়টি খালি কার্টিজ, চারটি লাইভ কার্টিজ, কিছু ইয়াবা ট্যাবলেট এবং মাদক সেবনের সরঞ্জাম পাওয়া যায়। মরদেহের পাশে গ্রেনেড বোমা সদৃশ একটি বস্তু পাওয়া যায়।
এছাড়া একই রাতে নগরীর হরিণটন এলাকায় জবাই করে বালু এবং জমির ব্যবসায়ী বাবলু দত্ত (৫০) নামের এক ব্যবসায়ীকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাত ১০টার দিকে নগরীর হরিণটানা থানাধীন রাজবন্ধ এলাকার দক্ষিণ পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত বাবুল দত্ত দক্ষিণপাড়া এলাকার বাসিন্দা অমূল্য দত্তের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বাইরের কাজ শেষ করে বাবলু দত্ত মোটরসাইকেলে বাড়িতে ফিরছিলেন। এ সময়ে কয়েকজন দুর্বৃত্ত গতিরোধ করে ফাঁকা একটি প্লটের মধ্যে নিয়ে যায়। প্লটের মধ্যে নিয়ে গিয়ে তাকে জবাই করে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যায়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
হরিণটানা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ খায়রুল বাসার কালবেলাকে বলেন, ধারালো ছুরি দিয়ে বাবলু দত্তকে হত্যা করা হয়েছে। কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত শেষে ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।