সারাদেশ

এবার চট্টগ্রাম পলিটেকনিকের প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীদের তালা

এবার চট্টগ্রাম পলিটেকনিকের প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষার্থীদের তালা


কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এবার চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার, হিসাব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কক্ষে তালা দেন।

তালা দেওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা ‘দেশ গড়ার হাতিরার, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার, কুমিল্লা পলিটেকনিকে হামলা কেন? প্রশাসন জবাব চাই, কারিগরি শিক্ষাই মুক্তি, দেখিয়েছে চীন পরাশক্তি’-সহ হাতে লেখা সংবলিত বিভিন্ন পোস্টার ও স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জন্য বরাদ্দ ৩০ শতাংশ প্রমোশন কোটা বাতিলসহ ছয় দফা দাবিতে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। সর্বশেষ সোমবার (২১ এপ্রিল) এ দাবি কয়েক ঘণ্টা অনশনও করেন তারা।

চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ কালবেলাকে বলেন, ‘দীর্ঘ আটমাস ধরে আমরা আন্দোলন করছি। এর অংশ হিসেবে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যেক পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ করার কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের দাবি না মানলে আরও কর্মসূচি আমরা দেব। যদি কোনোভাবে আমাদের দাবি মানা না হয়, তাহলে আমরা লংমার্চ টু কারিগরি অধিদপ্তর দিতে পারি। দাবি না মানা পর্যন্ত তালা খোলা হবে না।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টররা কারিগরি ব্যাকগ্রাউন্ডের নন। অধিকাংশই অষ্টম শ্রেণি কিংবা এসএসসি পাস, যাদের মূল দায়িত্ব ল্যাব সহকারী হিসেবে কাজ করা। তাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা প্রকৃত কারিগরি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবেন।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথম দাবি হচ্ছে জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ পদোন্নতির রায় হাইকোর্ট কর্তৃক বাতিল করতে হবে। ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। ২০২১ সালে রাতের আঁধারে নিয়োগপ্রাপ্ত ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ সম্পূর্ণভাবে বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

দ্বিতীয় দাবি, ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে যেকোনো বয়সে ভর্তির সুযোগ বাতিল করতে হবে। উন্নত বিশ্বের আদলে চার বছর মেয়াদি মানসম্পন্ন কারিকুলাম চালু করতে হবে এবং একাডেমিক কার্যক্রম পর্যায়ক্রমে ইংরেজি মাধ্যমে করতে হবে।

তৃতীয় দাবি, উপসহকারী প্রকৌশলী ও সমমান (১০ম গ্রেড) থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য সংরক্ষিত থাকা সত্ত্বেও যেসব সরকারি, রাষ্ট্রীয়, স্বায়ত্তশাসিত ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিম্ন পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

শিক্ষার্থীদের চতুর্থ দাবি, কারিগরি সেক্টর পরিচালনায় পরিচালক, সহকারী পরিচালক, বোর্ড চেয়ারম্যান, উপসচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, অধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট সব পদে কারিগরি শিক্ষাবহির্ভূত জনবল নিয়োগ নিষিদ্ধ করতে হবে এবং তা আইনানুগভাবে নিশ্চিত করতে হবে। এই পদগুলোয় অনতিবিলম্বে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল নিয়োগ ও সব শূন্য পদে দক্ষ শিক্ষক ও ল্যাব সহকারী নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।

পঞ্চম দাবি, স্বতন্ত্র ‘কারিগরি ও উচ্চশিক্ষা’ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা ও ‘কারিগরি শিক্ষা সংস্কার কমিশন’ গঠন করতে হবে।

আর ষষ্ঠ দাবি, পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার সুযোগের লক্ষ্যে একটি উন্নতমানের টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি নির্মাণাধীন চারটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে (নড়াইল, নাটোর, খাগড়াছড়ি ও ঠাকুরগাঁও) পলিটেকনিক ও মনোটেকনিক থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পাস ও ডুয়েটের আওতাভুক্ত একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে আগামী সেশন থেকে শতভাগ সিটে ভর্তির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।