সারাদেশ

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ

এবার সিলেটের উৎমাছড়া থেকে ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ


সিলেটের উৎমাছড়া থেকে লুট হওয়া প্রায় দুই লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার আদর্শপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে উৎমাছড়া থেকে চুরি হওয়া প্রায় ২ লাখ ঘনফুট পাথর জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। যা গত এক বছরে বিভিন্ন সময় লুটপাটের পর মজুত করা হয়েছিল।

বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কিছু অসাধু চক্র উৎমাছড়া থেকে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করে আদর্শপাড়া গ্রামের বিভিন্ন স্থানে পাচারের উদ্দেশ্যে মজুত করে আসছে।

মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) সকালে বিজিবির ৪৮ ব্যাটিলিয়ানের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. নাজমুল হকের নেতৃত্বে উৎমা বিওপির একটি টহলদল আদর্শগ্রামে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এ এলাকায় প্রায় ২ লাখ ঘনফুট পাথর মজুত রয়েছে।

পরে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ইফ্রাহিম ইকবাল চৌধুরী নেতৃত্বে স্থানীয় প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে উদ্ধার পাথরের সঠিক পরিমাপ ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

একই দিনে জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুরে আনুমানিক ২০ হাজার ঘনফুট পাথর ও ২৮ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করে প্রশাসন। অভিযানে উদ্ধার হওয়ার লুটপাটের পাথর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্র এলাকায়। যদিও লুটপাটের তুলনায় এখন পর্যন্ত উদ্ধার হওয়া পাথরের পরিমাণ অতি সামান্য।

এর আগে সাদা পাথর ও জাফলংয়ে নজিরবিহীন পাথর লুটপাটের পর সামনে আসে সীমান্তবর্তী বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে শত শত কোটি টাকার পাথর লুট ও পরিবেশ বিধ্বংসী কার্যকলাপ। অভিযোগ ওঠে, গত এক বছর ধরে বালু-পাথর লুটপাট চললেও প্রতিরোধ না করে নীরবে সহযোগিতা করছিল প্রশাসন।

ঘটনার টানাপোড়েনে সোমবার (১৮ আগস্ট) সিলেট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় জেলা প্রশাসক মো. শের মাহবুব মুরাদকে। তার স্থলে যোগ দিচ্ছেন সারোয়ার আলম।

বদলি করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা আজিজুন্নাহারকেও। সোমবার এক আদেশে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলামকে কোম্পানীগঞ্জে যোগ দিতে বলা হয়। তবে মঙ্গলবার তা পরিবর্তন করে চুনারুঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়াকে কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও করা হয়েছে।

সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এদিকে, গত এক বছরে লুটপাটের কবলে পড়ে হতশ্রী অবস্থা সিলেটের আরেক সম্ভাবনাময় পর্যটকপ্রিয় এলাকা উৎমাছড়া। সীমান্ত সংলগ্ন উৎমাছড়া এলাকা প্রাকৃতিকভাবে বালু ও পাথরে সমৃদ্ধ এবং পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত।

এ ছাড়া মঙ্গলবার সকালে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে জৈন্তাপুর উপজেলার রাংপানি নদীতে জব্দ করা প্রায় ২০ হাজার পাথর পুনস্থাপন করে প্রশাসন। একই সময়ে জব্দকৃত প্রায় ২৮ হাজার ঘনফুট বালু উন্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়।

জৈন্তাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জর্জ মিত্র চাকমা জানান, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড এলাকা থেকে চোরাকারবারিরা এসব পাথর ও বালু চুরি করেছে বলে জানা গেছে। প্রশাসনের সম্মিলিত অভিযান অব্যাহত আছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক মামলা দায়ের করা হবে।

এর আগে পাথর লুটের ঘটনায় দেড় হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোম্পানীগঞ্জ থানা এবং দেড় শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গোয়াইনঘাট থানায় মামলা করা হয়।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।