সারাদেশ

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক

খালসহ ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করলেন খুলনার জেলা প্রশাসক


খুলনায় কৃষকের ফসল ও বিল-বৈচিত্র্য রক্ষায় নাছিরপুর খালসহ ১০টি জলমহাল দ্রুত উন্মুক্তের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম। খাল যাদের অবলম্বন, খাল ঘিরে যাদের জীবন-জীবিকা তাদের ঘরে ঘরে এখন আনন্দের বাতাস বইছে।

সোমবার (৩০ জুন) ভূমি মন্ত্রণালয়ে জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটির সর্বশেষ সভায় পাইকগাছার নাছিরপুর খাল উন্মুক্ত করার ঘোষণার প্রেক্ষিতে তিনি এ কথা বলেন।

স্থানীয়রা জানান, বহুকাল যাবত খাল সন্নিহিত বিস্তীর্ণ এলাকার লাখ লাখ সাধারণ জেলে, কৃষক এবং সর্বসাধারণ অবরুদ্ধ জীবনপাত করে আসছে। রাজনৈতিক দলীয় পরিচয়ে কতিপয় খালদস্যু প্রতারণা ও জবরদস্তির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বঞ্চিত করে আসছিল। এসব জলমহাল থেকে গ্রামের সাধারণ মানুষ যেমন ফসলের জন্য পানি দিতে পারে না, তেমনি প্রয়োজনীয় কাজেও এ পানি ব্যবহার করতে পারত না। যারা খালের পাশে মাছের ঘের করে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের ঘেরের সর্বনাশ করে আসছিল এই খালদস্যুরা। যে কারণে দীর্ঘদিন ধরে গ্রামবাসী জলমহাল উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল।

জেলা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত খাল পাড়ের সাধারণ জেলে, কৃষক এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বয়ে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসককে তারা নানাভাবে অভিনন্দিত করছেন।

সম্প্রতি সে লক্ষ্যে খুলনা জেলার ১০টি জলমহাল উন্মুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে খুলনা জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু জেলা দশটি খাল উন্মুক্ত করার কার্যক্রম শুরু করেছি। এর মধ্যে নাছিরপুর খাল অন্যতম। পর্যায়ক্রমে এ খালটি উন্মুক্ত করা হবে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য। তবে এখনো এ বিষয়ে কোনো চিঠি ইস্যু করা হয়নি। দ্রুত এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।

উল্লেখ্য, পাইকগাছা উপজেলার তালতলা-নাছিরপুর খাল দখলকে কেন্দ্র করে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি। অস্ত্রশস্ত্রসহ দখল-পাল্টা দখলের মহড়া চালায় এলাকার প্রভাবশালী মহল। সেখানে মৎস্যজীবীদের মারধর করে উচ্ছেদের ঘটনা ঘটেছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, নাছিরপুর খালটি ইজারার জন্য একাধিক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে টেন্ডার দাখিল করা হলেও কোনো পক্ষকে বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, গত এপ্রিলে টেন্ডার কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা থাকলেও নানা জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। খালটি দখলদারিত্বের পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালী শাহাদাত হোসেন ডাবলু ও তার সহযোগীদের নামে অভিযোগ করেন সেখানকার মৎস্যজীবীরা। কয়েক দফা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে জানান তারা।

স্থানীয়দের কয়েকজন জানান, দখল-পাল্টা দখলকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে সেখানে সাধারণ মৎস্যজীবীদের মারধর করে উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ বিষয়ে একাধিকবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও মেলেনি সমাধান। এবার জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামের সাহসী উদ্যোগের ফলে যুগ যুগ ধরে চলে আসা ২-৫ জন দলবাজ দুবৃত্তের কবল থেকে লাখ লাখ খাল পাড়ের সাধারণ জেলে, কৃষক এবং সাধারণ মানুষের দাবি পূরণ হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার (১ জুলাই) বাংলাদেশ সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয়ের জনবান্ধব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নাছিরপুর খাল- তালতলা থেকে হরিঢালী ব্রিজ পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। সকাল ১০টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এসিল্যান্ড, জেলা-উপজেলা কর্মকর্তারা, যৌথ বাহিনীর উপস্থিতিতে দখলদারদের উচ্ছেদ করে সাধারণ জনগণের কাছে নাছিরপুরের দশ কিলোমিটার খাল হস্তান্তর করা হবে।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।