সারাদেশ

তাহমিদের কবরের পাশে ‘কালো জাদুর’ রহস্যময় জিনিস, এলাকায় আতঙ্ক

তাহমিদের কবরের পাশে ‘কালো জাদুর’ রহস্যময় জিনিস, এলাকায় আতঙ্ক


কালো জাদু, ব্ল্যাক ম্যাজিক, কুফরি কালাম বা তাবিজ করা এসব শব্দ শুনলেই ভীত হয়ে পড়ে যে কোনো মানুষ। কালো জাদু বলতে বোঝায়, শয়তান বা অতিপ্রাকৃতিক কিছুর সন্তুষ্টির মাধ্যমে কারও অনিষ্ট করা, কাউকে বিপদে ফেলানো, ব্যক্তির উদ্দেশ্য হাসিল করা। অঞ্চলভেদে রয়েছে এ চর্চার বিভিন্ন নাম।

যেমন ভুডু, তন্ত্রমন্ত্র, কুফরি কালাম, বাণ মারা ইত্যাদি। এমন এক কালো জাদুর রহস্যময় কিছু অদ্ভুত জিনিস পাওয়া গেছে নরসিংদীতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনে গত ১৮ জুলাই নরসিংদী শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের জেলখানা মোড়ে গুলিবিদ্ধ হয় প্রথম শহীদ হন তাহমিদ ভূঁইয়া তামিম (১৫) নামে এক শিক্ষার্থী। পরে শহীদ তাহমিদকে সদর উপজেলার চিনিশপুর পূর্বপাড়া সামাজিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার স্মৃতি ধরে রাখতে কবর বাধানোর কাজ শুরু করে সরকার।

রোববার (২৭ জুলাই) কবর বাধানোর জন্য শ্রমিকরা চিনিশপুর কবরস্থানে কাজ করতে যায়। সেখানে তাহমিদের কবরের চারপাশে ইটের গাঁথুনি করার জন্য মাটি খুঁড়তে থাকে। সেই সময় শ্রমিকরা তার কবরের পায়ের পাশ দিয়ে মাটি খোঁড়ার সময় শ্রমিকদের কোদালে কিছু একটা লাগে। এ সময় তারা সেটা বের করে দেখতে পায় পলিথিন জাতীয় কিছু একটা দিয়ে মোড়ানো কী যেন।

পরে কৌতূহলী শ্রমিকরা সেটা খুলে দেখতে পায় এটার ভেতর একটি পুতুল, পিন (সুই সদৃশ্য) এবং একটি কাগজে কিছু লেখা ও ছবি আঁকা। কাগজে কিছু বাংলা এবং অন্য ভাষায় বিভিন্ন কিছু লেখা রয়েছে। (তাতে বাংলায় লেখা রয়েছে ‘তাসলিমার মেয়ে তানজিনার বিচ্ছেদ তাহার এর ছেলে উজ্জ্বল এ দুজনের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ শুরু হোক তানজিনা উজ্জ্বলকে শত্রু মনে করুক, তানজিনা উজ্জ্বলের মধ্যে তালাক হয়ে যাক)। পরে শ্রমিকরা প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছে দেখে মাটি খোঁড়া কাজ বন্ধ করে দিয়ে ফিরে যায়। তবে এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কিত এলাকাবাসী।

আলতাফ মাহমুদ নামে একজন প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালো জাদুচর্চা হয়ে আসছে আদিকাল থেকেই। কালো জাদুর কাজে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন বস্তু বা প্রাণী। যেমন- পাখি, মাছ, ছাগল, পুতুল, মূর্তি ইত্যাদি। যাকে লক্ষ্য করে কালো জাদু করা হয়, তার ব্যবহৃত পোশাকের অংশ, নখ, চুলসহ আনুষঙ্গিক বিভিন্ন জিনিসপত্র সংগ্রহ করা হয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন তাবিজ-কবচ কাক, প্যাঁচা, ডাহুক-জাতীয় পাখি বা মাছের শরীরের ভেতর ভরে কার্যসিদ্ধ করা হয়। এ থেকে পরিত্রাণের উপায় হচ্ছে, এই তাবিজ-কবচ পুড়িয়ে ফেলা বা লেখা-জাতীয় জিনিস পানিতে ভিজিয়ে মুছে ফেলা। পাশাপাশি আমাদের সচেতন হতে হবে। নিজেদের চারপাশে তান্ত্রিক, কবিরাজ এবং সন্দেহজনক মানুষের ওপর নজর রাখতে হবে। কোনো অপরাধ সংঘটিত হতে দেখলে যেন সঙ্গে সঙ্গেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরিয়ে দেওয়া যায়।

এ ব্যাপারে শহীদ তাহমিদের বাবা রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া কালবেলা বলেন, ‘কবরের চার পাশে শ্রমিকরা যখন কাজ করতে থাকে, তখন মাটির নিচ থেকে কালো জাদুর এগুলো পাওয়া যায়। ইসলামের বিধান অনুযায়ী কালো জাদু করা ঠিক না। যারা করেছে তারা অমানবিক কাজ করেছে। কবরস্থানকে পুঁজি করে কুফুরি, জাদুটোনা ইত্যাদি করা খুবই জঘন্য খারাপ কাজ। এ ব্যাপারে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।