ফরিদপুরের নগরকান্দায় মৌখিকভাবে স্ত্রীকে তালাক দিয়ে আট মাস বয়সী শিশুকন্যাকে ছিনিয়ে নিয়ে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে কাইয়ুম বিশ্বাস নামে এক বাবার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ফরিদপুর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন শিশুর মা পপি বেগম।
ভুক্তভোগী পপি বেগম অভিযোগ করে বলেন, গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বোয়ালিয়া গ্রামে আমার বাড়ি। তিন বছর আগে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার রামপাশা গ্রামের কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য কলহ লেগেই ছিল। এ সময় কোলজুড়ে আসে একটি কন্যাসন্তান। কিন্তু সুখ বেশিদিন টিকেনি। পাঁচ মাস আগে কলহের জেরে মৌখিকভাবে তালাক দেন কাইয়ুম।
তিনি আরও বলেন, তালাকের সময় আট মাস বয়সী কন্যাশিশু তানহাকে জোর করে রেখে দেন কাইয়ুম। কিছুদিন পর জানতে পারি, আমার সন্তানকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে দেড় লাখ টাকায়। শিশুটি বিক্রি করা হয় একই উপজেলার শাখরাইল গ্রামের কুবাদ শেখের মেয়ে কোহিনুর বেগমের কাছে। আর এ বিক্রির মধ্যস্থতা করেন নগরকান্দা উপজেলার দলিল লেখক আলমগীর তালুকদার।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে পপি বেগম বলেন, আমার বাচ্চাটাকে একবার দেখার জন্য রাতে ঘুম হয় না, খাইতে পারি না। আমার কলিজা শুকায় গেছে। যাদের কাছে বিক্রি করছে, তাদের মায়ের পা ধইরা কান্নাকাটি করছি তাও বাচ্চার মুখ দেখাইছে না। ওরা বলছে, আমরা দেড় লাখ টাকা দিয়া কিনছি, যে বিক্রি করছে তার কাছে যাও।
তিনি বলেন, কাইয়ুম বিশ্বাস, তার তিন বোন মিতা আক্তার, বুলি বেগম, সাগরী আক্তারসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে ফরিদপুরের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা করেছি।
এ বিষয়ে জানতে শিশুটির বাবা কাইয়ুম বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে কাইয়ুম বিশ্বাসের বোন মিতা আক্তারের মোবাইলে কল করা হলে ফোন রিসিভ করেন একজন মিতার স্বামী পরিচয় দিয়ে বলেন, ব্যস্ত আছি, এ বলে ফোন কেটে দেন।
নগরকান্দা থানার ওসি মোহাম্মদ সফর আলী কালবেলাকে বলেন, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ চলছে। অভিযোগে শিশুটি বিক্রির যে ঠিকানা দেওয়া হয়েছে, সেখানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। শিশুটিকে পাওয়া গেলে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। এরপর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে, শিশুটিকে মা না বাবার কাছে দেওয়া হবে।