সারাদেশ

নতুন জাতের ধান চাষে বিঘাপ্রতি লাভ ৭৫ হাজার টাকা

নতুন জাতের ধান চাষে বিঘাপ্রতি লাভ ৭৫ হাজার টাকা


চলতি বোরো মৌসুমে চাষি মোস্তফা হাসান চার বিঘা জমিতে মাত্র ২১ কেজি বীজ লাগিয়ে ২২১ মণ ধান উৎপাদন করেছেন। যার বাজারমূল্য প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা! বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলায় প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে সোনালি বর্ণের এই ধান।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনিস্টিটিউটের সর্বশেষ ও সর্বাধুনিক জাত ব্রি-১০৮ ধান চাষে এ অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছেন উপজেলার শৌখিন এই চাষি।

ইউটিউবের মাধ্যমে খোঁজ পেয়ে সম্পূর্ণ ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষক মোস্তফা হাসান শেরপুর থেকে ৩০০ টাকা কেজি দরে ২১ কেজি বীজ ধান সংগ্রহ করেন। চার বিঘা জমিতে কিষান খরচ, জমি চাষ, সার ওষুধ ও সেচ খরচ মিলে তার প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। অধিক রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ও খরা সহিষ্ণু হওয়ায় বীজতলা থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত তার এই খরচ হয়েছে বলে জানান। সার ব্যবস্থাপনা কম লাগায় ও বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় অধিক লাভের আশা প্রকাশ করেন। জানুয়ারিতে রোপণ করা ধান ইতোমধ্যে পেকে গেছে। এক শতক জমির ধান নমুনা কর্তনে ৪৫ কেজি ধান পেয়েছেন। মাঠপর্যায়ে প্রতি মণ ধানের মূল্য ১ হাজার ৬০০ টাকা বলে তিনি জানান। ২/১ দিনের মধ্যে বাকি ধান কাটা হবে বলে জানান মোস্তফা হাসান।

ইতোমধ্যে ফকিরহাট উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে বীজের জন্য ২০ মণ ধানের চাহিদার কথা জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন।

রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে উপজেলার বাহিরদিয়া ব্লকে কৃষক মোস্তফা হাসানের ধানক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, আশেপাশের অনেক কৃষক আগ্রহ নিয়ে ধান দেখতে এসেছেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ কৃষি বিভাগের লোকজন কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন।

উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নয়ন সেন বলেন, সোনালি রঙের ব্রি-১০৮ জাতের ধানটি এই উপজেলায় প্রথম চাষ হয়েছে। সম্ভবত জেলায়ও প্রথম হবে। এ ধানের চাল মাঝারি লম্বা ও চিকন। ভাত ঝরঝরে ও সুস্বাদু হওয়ায় উচ্চ মূল্যের জিরা ধানের বিকল্প হিসেবে উদ্ভাবন করা হয়েছে। একদিকে উৎপাদন খরচ কম, অন্যদিকে অধিক দামের কারণে ইতোমধ্যে ধানটির প্রতি ব্যাপক চাহিদার সৃষ্টি হয়েছে।

কৃষক মোস্তফা হাসান ও ক্ষেত মজুর রহমত ফকির জানান, ৪ বিঘা ৫ শতক জমিতে ব্রি-১০৮ ধান চাষের সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় তিন লাখ টাকা লাভ হবে। এ অঞ্চলে প্রথম চাষেই সাফল্য পাওয়ায় অনেক চাষি এটি চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তাদের সহযোগিতা করতে চান তিনি। কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ ও কারিগরি সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে তিনি জানান।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শেখ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ব্রি-১০৮ হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের আবিষ্কৃত সর্বাধুনিক জাতের ধান। এ ধানটি অন্যান্য জাতের তুলনায় বেশি উৎপাদন হয়। প্রতি গোছায় গড় কুশির সংখ্যা ১৬/১৭টি। দানার পুষ্টতা শতকরা ৮৮.৬ ভাগ। চালে প্রটিনের পরিমাণ ৮.৮ ভাগ যা অন্যান্য চালের তুলনায় বেশি স্বাস্থ্য সম্মত।

উপজেলার অন্যান্য কৃষকদের মাঝে ধানটি ছড়িতে দিতে এই ক্ষেত থেকে সরকারিভাবে বীজ সংগ্রহের পরিকল্পনার কথা জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।