আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ) আসনে ভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হলেও সম্প্রীতির নজির গড়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও গণঅধিকার পরিষদের এডভোকেট জাহিদুর রহমান। প্রচারণার মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বপূর্ণ আচরণে দুই প্রার্থী ইতোমধ্যে সাধারণ মানুষের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
একজনের সভায় আরেকজনের উপস্থিতি, আবার সভা শেষে একজন আরেকজনের বাড়িতে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করে সাধারণ মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটার দিকে বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা ইউনিয়নের নালবহর গ্রামে মতবিনিময় সভা করছিলেন জামায়াত প্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। এ সময় খবর পান, পাশের গ্রামে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী জাহিদুর রহমানও সভা করছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সেখানে ছুটে যান।
অন্যদিকে নিজের সভা শেষ করেই জাহিদুর রহমানের বাড়িতে শুভেচ্ছা জানাতে যান জামায়াতের সেলিম উদ্দিন। এসময় দুই দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি তারা দুজনই বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের উন্নয়ন ও সমস্যার সমাধান নিয়ে আলোচনা করেন। স্থানীয়রা জানান, প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েও তাদের এমন সম্প্রীতির আচরণ সত্যিই বিরল দৃষ্টান্ত।
দুই প্রার্থীর বক্তব্যে উঠে আসে এক অভিন্ন বার্তা—“আমরা কারো বিরুদ্ধে বিদ্বেষ বা প্রতিহিংসা নিয়ে মাঠে নামিনি। জনপ্রিয়তাই হবে জয়ের মাপকাঠি। জনগণের ভালোবাসা অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। নির্বাচনে জয়-পরাজয় বড় কথা নয়, বরং এলাকার উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠাই আমাদের অঙ্গীকার।”
তারা আরও জানান, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জ হচ্ছে প্রবাসী অধ্যুষিত জনপদ। তাই এখানকার জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দুই উপজেলাকে শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ এলাকায় পরিণত করাই হবে তাদের মূল লক্ষ্য।
জুলাই বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা জামায়াতে ইসলামী ও গণঅধিকার পরিষদের উভয় দলেরই বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ এলাকায় শক্তিশালী ভিত্তি রয়েছে। তাই নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, দলীয় আদর্শ ও প্রার্থীর পরিকল্পনা ভোটারদের সামনে তুলে ধরতে, তবে যেন কোনো প্রকার সংঘাত বা বিভ্রান্তি তৈরি না হয়।
সম্প্রীতি বজায় রেখে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাধ্যমে এক নতুন রাজনৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন এই দুই প্রার্থী।