সারাদেশ

সিলেটে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তিন মামলায় আসামি ১৮০০

সিলেটে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় তিন মামলায় আসামি ১৮০০


সিলেটে ফিলিস্তিনের পক্ষে মিছিল থেকে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩টি মামলা হয়েছে।

বুধবার (৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টায় কোতোয়ালি মডেল থানায় সর্বশেষ মামলাটি করেন বাটার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোস্তাসিম বিল্লাহ।

এতে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৮০০-৯০০ জনকে। এ নিয়ে কোতোয়ালি থানায় তিন মামলায় মোট আসামির সংখ্যা দাঁড়াল প্রায় ১৮০০ জনে। এসব মামলায় ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

জানা গেছে, গাজায় ইজরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে গত সোমবার সকাল থেকে বিক্ষোভে নামেন সিলেটের মানুষ। দুপুরের দিকে নগরীর মীরবক্সটুলা, জিন্দাবাজার, বন্দরবাজার, চৌহাট্টা ও আম্বরখানাসহ বিভিন্ন এলাকায় রেস্টুরেন্ট, সুপারশপ, আবাসিক হোটেল, জুতার শো রুম, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইজরায়েলি পণ্য থাকার অভিযোগে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সময় হোটেল রয়েল মার্ক, কেএফসি, ডোমিনোজ পিজ্জা, পিজ্জাহাট, বাটা জুতার চারটি শো রুম, ইউনিমার্ট সুপারশপ, আলপাইন রেস্টুরেন্টসহ ১৩টি প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক লুটপাট চালানো হয়।

ফেসবুকে বাটা থেকে লুট করা জুতা বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন অনেকেই। পুলিশ ঘটনার পরপরই তৎপর হয়ে উঠে। ফেসবুকে জুতা বিক্রির বিজ্ঞাপন, বিভিন্ন গণমাধ্যমের ভিডিও ও ছবি দেখে শনাক্ত করে ২৩ জনকে গ্রেপ্তারে সক্ষম হয়। ঘটনার পরদিন মঙ্গলবার মীরবক্সটুলার হোটেল রয়েল মার্কের ম্যানেজার অপারেশন্স আবদুল মতিন সরকার বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৩০-৪০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। এতে তিনি অভিযোগ করেন, তার হোটেলের ক্যাশ থেকে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকাসহ কম্পিউটার ও অন্যান্য মূল্যবান কাগজপত্র লুট করা হয় এবং হোটেলের নিচতলা ভাঙচুর করে প্রায় ২০-২৫ লাখ টাকার ক্ষতি করেছে দুর্বৃত্তরা।

এরপর বুধবার বিকেলে ক্ষতিগ্রস্ত ডোমিনোজ পিজ্জার এক্সিকিউটিভ আল-আমিন বাদি হয়ে ৭০০-৮০০ জনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। এতে তিনি ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখ করেন প্রায় ৭৭ লাখ টাকা। ওই রাতেই বাটার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক মোস্তাসিম বিল্লাহ বাদি হয়ে কোতোয়ালি মডেল থানায় তৃতীয় মামলাটি করেন। ওই মামলায় অজ্ঞাত আসামির সংখ্যা ৮০০-৯০০। বাটার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে মামলার এজাহারে।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জিয়াউল হক কালবেলাকে বলেন, গাজায় ইজরায়েলি হামলার প্রতিবাদে সিলেটের সর্বস্তরের নাগরিক বিক্ষোভ সমাবেশে সমবেত হয়। এই সুযোগে কিছু দুষ্কৃতকারী কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ইজরায়েলি তকমা দিয়ে হামলা ও লুটপাট চালায়। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ তৎপর হয়ে ওঠে এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কড়া পাহারা এবং নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ পর্যন্ত ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ, তাদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিভিন্ন ফুটেজ দেখে বহু অপরাধী শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে এবং লুট করা মালামাল উদ্ধারে নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। কোতোয়ালি থানায় এ পর্যন্ত ৩টি মামলা হয়েছে। তিন মামলায় আসামির সংখ্যা ১৭০০ থেকে ১৮০০ জন।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।