ব্যাংকিং সমস্যার কারণে প্রায় ৪০০টি পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। সরকারের নীতি সহায়তা পেলে এই কারখানাগুলো পুনরায় চালু হওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে ব্যাংকিং সমস্যা নিয়ে সদস্যদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভা করেছে সংগঠনটি। সভা শেষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় ৭০টিরও বেশি সদস্য প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এতে বিজিএমইএর সহসভাপতি মো. শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, পরিচালক ফয়সাল সামাদ এবং সংগঠনটির এক্সিট পলিসি সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম এবং ওয়ান স্টপ সেল সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ভুঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
সভায় খেলাপি ঋণ নীতিমালা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। সদস্যরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সার্কুলারের অধীনে খেলাপি ঋণ নীতিমালার মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব করেন।
তারা জানান, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সংক্ষিপ্ত সময়ে ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব নয়। এ ছাড়া ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ডাউন পেমেন্ট কমানোর বিষয়েও আলোচনা করা হয়।
ফোর্সড লোন ও মামলার বিষয়ে সদস্যরা জানান, নিয়মবহির্ভূত কারণে ফোর্সড লোনের শিকার হয়ে অনেক প্রতিষ্ঠান চেক ডিজঅনার এবং অর্থঋণ মামলার মতো জটিলতার শিকার হচ্ছে, যা তাদের কার্যক্রমকে আরও বাধাগ্রস্ত করছে। তারা এ পরিস্থিতি নিরসনে বিজিএমইএ বোর্ডকে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণের আহ্বান জানান।
সহনশীল এক্সিট পলিসি বিষয়ে তারা একটি সহনশীল এক্সিট নীতিমালা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, এটি ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের সম্মানের সঙ্গে ব্যবসা থেকে বেরিয়ে আসার সুযোগ দেবে।
সদস্যরা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যোক্তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক যে নীতি সহায়তা দিচ্ছে, তা যেন শুধু বড় রপ্তানিকারকদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে। বরং, ছোট ও মাঝারি কারখানাগুলোও যেন এই সুবিধা পায়, সে ব্যাপারে জোরালোভাবে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান তারা। তারা পোশাক খাতে দীর্ঘদিন ধরে রুগ্ণ হয়ে থাকা ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের সমস্যা সমাধানে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়।
সভায় বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, উত্থাপিত সব বিষয় নিয়ে বিজিএমইএ পরিচালনা পর্ষদ দ্রুত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবে। একইসঙ্গে ব্যাংকিং সমস্যাক্রান্ত কারখানাগুলোকে তাদের সমস্যাগুলো লিখিত আকারে বিজিএমইএকে দ্রুত অবহিত করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।