বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় যেসব কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
রোববার (১৩ এপ্রিল) রিজার্ভ চুরির ঘটনা রিভিউর জন্য গঠিত উচ্চপর্যায়ের কমিটির বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘সিআইডির তদন্ত যখন ম্যাচিউর পর্যায়ে চলে গিয়েছিল (আওয়ামী লীগ আমলে) তখন আগেই সিআইডিকে সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকের যারা ইনভলভ (রিজার্ভ চুরি) আছে, তাদের নাম যেন অভিযোগপত্রে না দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে ইনস্ট্রাকশন দেওয়া হয়েছিল বলে আজ সিআইডি থেকে আমরা জেনেছি। বাংলাদেশের যারা অপরাধের জন্য দায়ী ছিল, তাদের বিচারের সম্মুখীন করার জন্য করণীয় ঠিক করা হচ্ছে।’
উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিনের রিপোর্টে যাদের নাম এসেছে, তাদের ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক কী ব্যবস্থা নিয়েছে, এটা আমরা জানতে চেয়েছি। কী ব্যবস্থা নিতে হবে সেটাও বলেছি।’
পরবর্তী কার্যক্রমের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘রিজার্ভ চুরির বিষয়ে নিউইয়র্কে বিচার চলমান। বাংলাদেশে তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে কোনো ব্যবস্থা নিলে নিউইয়র্কের বিচারের কোনো সমস্যা হবে কি না, এই বিষয়টা আমরা নিশ্চিত হতে চাচ্ছি। এ বিষয়ে ড. কামাল হোসেনের ল’ ফার্মের মতামত নেওয়া হবে এবং তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা ফরাসউদ্দিনের রিপোর্টে অনেকের নাম পাবেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য না দিয়ে দু-চার সপ্তাহ দেরি করেছিলেন। এগুলো তখন পত্রিকার প্রতিবেদনে এসেছে। আরও বেশ কয়েকজনের নাম বিভিন্ন প্রতিবেদনে এসেছে। এটা তদন্ত করতে গিয়ে তৎকালীন সরকারের আমলে সীমাহীন রাজনীতি করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জালিয়াতি করে সুইফট কোডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। স্থানান্তরিত এসব টাকা পাঠানো হয়েছিল ফিলিপিন্সে তিনটি ক্যাসিনোতে।
এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিলেও বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।