বাংলা সংগীতাঙ্গনের পরিচিত মুখ হাশিম মাহমুদ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি শ্রোতাদের উপহার দিয়ে এসেছেন অসংখ্য জনপ্রিয় গান। কিছু গান হয়েছে কালজয়ীও। আছে ব্যস্ত জীবনের নানা টানাপোড়েন। তার মধ্যেও সংগীতের প্রতি তার ভালোবাসা একটুও কমেনি, বরং বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গান নিয়েই যেন তার জীবন আরও বেশি আবদ্ধ হয়ে উঠেছে।
হাশিম মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
সম্প্রতি জানা গেছে, প্রতিদিন ভোরে নিয়ম করে গানের রেওয়াজ করছেন এই শিল্পী। সকালের নির্মল পরিবেশে তিনি নিজেকে নিমগ্ন করেন সুর আর তাল-লয়ের জগতে। তার বিশ্বাস, সকালে গান অনুশীলন করলে মন প্রশান্ত থাকে, কণ্ঠ স্বচ্ছ হয় এবং সৃজনশীলতা আরও প্রসারিত হয়। এতে সহযোগিতা করছেন তার ছোট ভাই বেলাল আহমেদ।
ছোট ভাই বেলালের সঙ্গে হাশিম মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
কালবেলাকে শিল্পীর ভাই বলেন, ‘তিনি অন্য ধাঁচের একজন মানুষ। যে শুধু গান নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন। গানের বাইরে তার কোনো ভাবনা নেই। গানের বিনিময়ে কে কী দিল, কোন প্রতিষ্ঠান কী সম্মানী দিল—তা নিয়ে তার কোনো আক্ষেপ নেই। এমন জীবন সহজে কেউ যাপন করতে পারে বলে আমি মনে করি না।’
এ সময় তার ভাই আরও জানান, এখন প্রতিদিন সকালে গানের রেওয়াজ করেন হাশিম মাহমুদ। গানের প্রতি অনেকটাই নিয়ম মেনে চলছেন তিনি। ঘুম থেকে উঠে তার প্রথম কাজ গানের রেওয়াজ করা।
হাশিম মাহমুদের ‘বাজি’ গানে সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত
এদিকে দীর্ঘ বিরতির পর হাশিম মাহমুদের ‘বাজি’ গান দিয়ে আবারও কোক স্টুডিও বাংলার নতুন গান প্রকাশ পেয়েছে। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তিনি, যা নিয়ে কালবেলাকে তিনি বলেন, ‘আমি গানের মানুষ। গান থেকে কখনো বিরতিতে যাইনি। তবে কোকের এই আয়োজন ভালো লেগেছে। এটুকুই।’
এ সময় নতুন প্রজন্মের জন্য কী গান করতে চান জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোনো প্রজন্মের জন্যই নির্দিষ্ট কোনো গান করতে চাই না। আমার গান সবার জন্য।’
হাশিম মাহমুদ ক্রিকেট খেলা পছন্দ করেন। বাংলাদেশের খেলা থাকলে যত কাজই থাকুক, তিনি ঘর থেকে বের হন না। বলতে গেলে ক্রিকেটের পাগল ভক্ত তিনি। খেলার প্রতি তার এমন ভালোবাসা নিয়ে হাশিম বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই আমি ক্রিকেট খেলার প্রতি পাগল। যেদিন বাংলাদেশের খেলা থাকে, সেদিন যত গুরুত্বপূর্ণ কাজই থাকুক না কেন, কেউ আমাকে ঘর থেকে বের করতে
পারবে না।’
এ সময় তার প্রিয় ক্রিকেটারদের নামও জানান তিনি। দেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে একসময় তার প্রিয় ক্রিকেটার ছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। এরপর তামিম ইকবালের খেলা ভালো লাগত। এ ছাড়া দেশের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি ক্রিকেটার ব্রায়ান লারার ভক্ত তিনি।
ছোট ভাই বেলালের মতোই হাশিম মাহমুদের খুব কাছের একজন নির্মাতা মেজবাউর রহমান সুমন। বলতে গেলে তিনিই তাকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন। তাই প্রতিটি অর্জনেই তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসা প্রকাশ করেন তিনি।
সামনে এই শিল্পীর আরও বেশ কিছু প্রজেক্ট আসছে। যেগুলো নিয়ে তিনি এখন ব্যস্ত আছেন। তবে খুব বেছে কাজ করেন তিনি। তাই সিনেমা হোক বা নাটক—যে কোনো মাধ্যমে গান দেওয়ার ক্ষেত্রে গল্পে গুরুত্ব দেন হাশিম।
হাশিম মাহমুদ। ছবি: সংগৃহীত
হাশিম মাহমুদ বর্তমানে পরিবার ও মায়ের যত্নে জীবন-যাপন করছেন। তার মা খাবার থেকে শুরু করে তার সব ধরনের খেয়াল রাখেন। ছেলেকে নিয়ে তারও একটি স্বপ্ন আছে। যেই স্বপ্ন হচ্ছে একদিন হাশিম বিশাল স্টেজে তার লেখা জনপ্রিয় সব গান নিজের কণ্ঠে গাইবে এবং তিনি স্টেজের সামনে বসে শুনবেন।