সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া আয়মান। মিষ্টি হাসি, সহজাত অভিনয় আর ক্যামেরার সামনে সাবলীল উপস্থিতি দিয়ে এরই মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন দর্শকদের হৃদয়ে। ছোট পর্দা থেকে শুরু করে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম এমনকি সিনেমা, সব জায়গাতেই নিজের দক্ষতার ছাপ রেখে চলেছেন তিনি। সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তার অভিনীত সিনেমা ‘উৎসব’। ছবিটি এরই মধ্যে প্রশংসা কুড়িয়েছে সিনেপ্রেমীদের কাছে। আর ঠিক এ সময়েই কালবেলাকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে বড় পর্দায় তার অভিনয়ের অভিজ্ঞতার না বলা অনেক কথা। লিখেছেন তামজিদ হোসেন।
উৎসব কেমন উপভোগ করছে দর্শক?
সবকিছু মিলিয়ে ‘উৎসব’ সিনেমা উৎসবের মতো করেই যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত এই ছবি প্রেক্ষাগৃহে দেখতে যাচ্ছেন দর্শকরা এবং চলচ্চিত্রটির সাফল্যেরও উৎসব বইছে। কোনো একটা সিনেমা মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত একটা ভয় কাজ করে। আমার বেলায়ও সেটা হয়েছিল। কারণ আমি বুঝতে পারছিলাম না মানুষ এ ছবিটাকে কীভাবে মূল্যায়ন করবে। তবে দর্শকরা সিনেমা দেখে যখন পজিটিভ কথা বলা শুরু করল, তখন খুবই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। এ সিনেমা দেখার জন্য প্রথম দুদিনের থেকে তৃতীয় দিনে আশ্চর্যজনকভাবে দর্শকের চাহিদা বাড়তে থাকে। আর এখন বলাই যায় ‘উৎসব’ সফলতা পেয়েছে।
ফুলের নামে নাম, মায়াশালিক থেকে কাজলরেখা, এরপর উৎসব! সিনেমা হিট হয়ে গেলে শিল্পীরা সেখানেই থেকে যায়। আপনি কী এখনো ছোট পর্দায় কাজ করবেন নাকি বড় পর্দায় নিয়মিত হবেন?
আমার অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় মিজানুর রহমান আরিয়ান ভাইয়ার ‘ফুলের নামে নাম’ নাটকের ‘বেলী’ চরিত্র দিয়ে। এই বেলী চরিত্রটি দর্শকরা এত পছন্দ করে যে, এটা দেখে শিহাব শাহীন ভাই আমাকে ‘মায়াশালি’কে কাস্ট করেন। এরপর আমার কাছে ‘কাজলরেখা’ আসে এবং সবশেষ ‘উৎসব’। তবে আশ্চর্যের বিষয়—উৎসব সিনেমাতেও আমার চরিত্রটির ফুলের নামে নাম। আমি ভাগ্যবান যে, গল্পের লেখক আমাকে এটা ভেবেই লিখে থাকেন। আর প্রথমত আমি একজন অভিনয়শিল্পী। তাই কোন মাধ্যমে কাজ করছি সেটা বিষয় নয়। বড় পর্দা হোক বা ছোট পর্দা, আমি ভালো গল্পে কাজ করতে চাই। এ ছাড়া নাটকে আমার ভক্ত আছে, তাদের জন্য ছোট পর্দাতেও কাজ করব। আর সিনেমার কাজ যখন আসবে তখন ছোট পর্দার কাজ কিছু কমিয়ে দেব।
‘উৎসব’ সিনেমায় এত এত তারকা, তারকাবহুল এ সিনেমায় আপনাকে কীভাবে যুক্ত করা হলো?
নির্মাতা তানিম নূর ভাই এবং তার পুরো টিম কী ভেবে আমাকে সিলেক্ট করেছে সেটা আমি জানি না। তবে আমাকে যখন তনিম ভাই ফোন দিয়ে বলেন, আমি একটা সিনেমা বানাব, সেখানে একটা চরিত্রে নিতে চাই তোমাকে। এরপর তিনি আমাকে সংক্ষিপ্ত করে গল্পের ধারণা দিলেন। এটা শুনে আমি তাকে বলি, ভাইয়া এই গল্পে এত বড় বড় চরিত্রে যারা অভিনয় করছেন তাদের কাছে আমি কিছু নই, আর আমি তো আগে কখনো সিনেমা করিনি। তবুও আপনি যখন আমাকে বললেন আমি এ ছবিতে কাজ করতে চাই। এরপর যখন আমি স্ক্রিপ্ট দেখি তখন বুঝলাম যে, আমার চরিত্রটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আর এভাবেই সিনেমায় যুক্ত হওয়া।
জাহিদ হাসান, চঞ্চল চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রায় দুই-তিনটা জেনারেশন এখানে ছিল। ভয় লেগেছিল কাজ করতে?
তাদের সঙ্গে কাজ করাটা আমার অদ্ভুত অভিজ্ঞতা। জাহিদ হাসান ভাই আমার খুবই পছন্দের একজন মানুষ। আমরা সিনেমায় একসঙ্গে একটা সিন শেয়ার করেছি। এদিকে চঞ্চল ভাই তো এখন নাটক কম করেন এবং রেগুলার কাজ করেন ওটিটি এবং সিনেমায়। সে জায়গা থেকে ভাবছিলাম, যদি কাজ হয় তাহলে মন্দ হতো না। কে না চায় এত বড় বড় শিল্পীর সঙ্গে কাজ করতে! এর জন্য আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি। কারণ, তাদের মতো অভিনেতার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি।
যতটুকু শুনেছি, আপনাদের শুটিং হয়েছে রাজশাহীতে। শুটিংয়ের সময়ে মজার কোনো ঘটনা শেয়ার করতে চান?
রাজশাহীতে সৌম্য আর আমার টানা ছয় দিন শুটিং হয়েছে। সেভাবে আমরা সময় পাইনি সেখানে। তবে এক দিন আমাদের শুটিং আগে আগে শেষ হয়, তারপর রুমে ফিরে ফ্রেশ হয়ে আমরা সন্ধ্যার দিকে ওখানকার নদীর পাড়ে ঘুরতে যাই, ওখানকার বিখ্যাত কিছু খাবার খাই। ওখানকার এয়ারপোর্টের পাশে খুব ভালো ‘কালাভুনা’ পাওয়া যায়। আমি যেটা করেছি, বাসা থেকে বোম্বাই মরিচ নিয়ে গিয়েছি; কারণ আমি ঝাল খেতে খুব পছন্দ করি। যেহেতু একবেলা ভাত খাই, সেহেতু রাজশাহীতে তখন আমি বোম্বাই মরিচ দিয়ে মজা করে খাবার খেয়েছি।
অভিনয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা…
কোনো পরিকল্পনা নেই। শুধু মনোযোগ দিয়ে অভিনয় করে
যেতে চাই।