বিশ্ব

আল্লাহর সঙ্গে মুসা (আ.)-এর কথা বলার স্থানে হচ্ছে বিলাসবহুল রিসোর্ট

আল্লাহর সঙ্গে মুসা (আ.)-এর কথা বলার স্থানে হচ্ছে বিলাসবহুল রিসোর্ট


পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত মিসরের সিনাই পর্বত। এই পাহাড়ে দাঁড়িয়েই মহান আল্লাহ তায়ালার সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিলেন হজরত মুসা (আ.)। পবিত্র এই স্থানটি হাজার বছর ধরে সংরক্ষিত রাখা হলেও বর্তমানে মিসর সরকার জায়গাটিকে বিলাসবহুল মেগা-রিসোর্টে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

এই পর্বত কেবল ইসলাম ধর্মের জন্য নয়, খ্রিস্টান ও ইহুদিদের কাছেও অত্যন্ত পবিত্র। বিশ্বাস করা হয়, এখানে নবী হজরত মুসা (আ.) ঐশ্বরিক বাণী পেয়েছিলেন। স্থানীয়রা এই স্থানটিকে ‘জাবালে মুসা’ বা মুসার পর্বত নামে চেনেন।

অনেক বছর ধরে পর্যটকরা বেদুইন গাইডদের সঙ্গে এই পাহাড়ে চড়ে সূর্যোদয় দেখতেন এবং ধর্মীয় পদযাত্রায় অংশ নিতেন। কিন্তু এখন মিসর সরকার এই পবিত্র স্থানটিকে পর্যটকদের জন্য বিলাসবহুল আবাসে রূপান্তর করার পরিকল্পনা করেছে, যা নিয়ে বিরোধিতা চরমে পৌঁছেছে।

এই স্থানটি ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে তালিকাভুক্ত। এখানে একটি প্রাচীন মঠ, শহর এবং পাহাড় রয়েছে। তবে এখন এটি বদলে যাচ্ছে এবং সেখানে বিলাসবহুল হোটেল, ভিলা, বিপণিবিতান ও সুপারমল নির্মাণ করা হচ্ছে। স্থানীয় বেদুইন সম্প্রদায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে এ পরিবর্তন করা হচ্ছে।

ব্রিটিশ ভ্রমণ লেখক বেন হফলার জানিয়েছেন, ‘এই প্রকল্পটি বেদুইনদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি এমন কোনো উন্নয়ন নয় যা স্থানীয়রা চেয়েছিল। বরং বাইরের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করছে।’

পবিত্র স্থানে খ্রিস্টানদের ষষ্ঠ শতাব্দীর একটি উপাসনালয় বা মঠ রয়েছে, যা গ্রিসের সঙ্গে সম্পর্কিত। এই কারণে মিসরের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি বিরোধিতা এসেছে গ্রিসের পক্ষ থেকে।

চলতি বছরের মে মাসে মিসরের একটি আদালত রায় দিয়েছে, যে বিশ্বের প্রাচীনতম খ্রিস্টান মঠ, সেন্ট ক্যাথেরিনস, সরকারি জমিতে অবস্থিত। এই রায়ের পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায়। তবুও বিতর্কিত প্রকল্পটি এগিয়ে চলছে এবং সেখানে বিলাসবহুল হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট দ্রুত নির্মাণ করা হচ্ছে।

জেরুজালেমের গ্রিক অর্থোডক্স প্যাট্রিয়ার্কেট জানিয়েছে, তাদের এই পবিত্র স্থানের ওপর ধর্মীয় কর্তৃত্ব রয়েছে এবং হজরত মোহাম্মদ (সা.) নিজে এই উপাসনালয়ের জন্য একটি সুরক্ষাপত্র জারি করেছিলেন।

তারা আরও জানিয়েছে, বাইজেন্টাইন আমলের এই মঠের ভেতরে একটি ছোট মসজিদও রয়েছে, যা ফাতেমি যুগে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদটিকে তারা ‘খ্রিস্টান ও মুসলিমদের মধ্যে শান্তির চমৎকার প্রতীক এবং সংঘাতময় বিশ্বে শান্তি ও আশার এক আশ্রয়স্থল’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

সূত্র : বিবিসি





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।