আসামের ধুবরি জেলা ও পার্শ্ববর্তী সীমান্ত এলাকা নিয়ে রাজ্য সরকার কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও কঠোর করেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা জানিয়েছেন, রাতের সময় ‘দেখামাত্র গুলি চালানোর’ নির্দেশ দুর্গাপূজা পর্যন্ত বহাল থাকবে। উৎসবের সময় সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্য এই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
এই কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের পেছনে রয়েছে জুন মাসের ঘটনা। ধুবরিতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে কয়েকজন নিহত হন, শতাধিক আহত হন। পরে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলে প্রশাসন রাতের সময় দেখা মাত্র গুলি চালানোর নির্দেশ দেয়।
প্রাথমিকভাবে এই নির্দেশ কেবল রাতের জন্য কার্যকর ছিল, যাতে দিনের বেলায় সাধারণ জীবনযাত্রা এবং ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। রাতের সময় গুলি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় মূলত পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে।
স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, উত্তেজনার মূল কারণ ছিল ভুয়া খবর ও গুজব। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া গুজব ও ভুল তথ্য অনেককে প্রভাবিত করেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজ্যজুড়ে ইন্টারনেট সেবা কয়েকদিন বন্ধ রাখা হয়।
ধুবরির পাশাপাশি গোলপাড়া, বারপেটা ও কোচবিহার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসব এলাকায় টহল এবং নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হলেও সম্পূর্ণ শান্তি ফিরে আসেনি।
মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেছেন, ‘সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো ঝুঁকি নিতে চাই না। তাই আগের নির্দেশ বহাল থাকবে।’
প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী এলাকায় এখনো পরিস্থিতি তীক্ষ্ণ। গোষ্ঠীগত সংঘর্ষ, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামাজিক উত্তেজনা—সব মিলিয়ে ধুবরির পরিবেশ এখনো থমথমে। উৎসবের সময় পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনী টহল জোরদার করেছে। সব গুরুত্বপূর্ণ এলাকা এবং রাস্তাঘাটে কড়া নজরদারি রয়েছে।
এছাড়া, স্থানীয় প্রশাসন জনসচেতনতার জন্য নিয়মিত সতর্কবার্তা জারি করছে। মানুষদের অশান্তি সৃষ্টি করা তথ্য ছড়ানো থেকে বিরত থাকতে বলা হচ্ছে এবং সাধারণ জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখার জন্য নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
দুর্গাপূজা পূর্ব ভারতের অন্যতম বড় উৎসব। তাই সরকার সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে যাতে উৎসবকালীন যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়।