ইসরায়েলে অবস্থানরত মার্কিন সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের নিরাপত্তায় সতর্কতা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার (১৩ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন দূতাবাসের জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতির কারণে ইসরায়েলে অবস্থানরত সব মার্কিন সরকারি কর্মচারী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিজ অবস্থানে নিরাপদে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সাধারণ মার্কিন নাগরিকদেরও সর্বোচ্চ সতর্কতা বজায় রেখে চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জরুরি পরিস্থিতিতে (যেমন মর্টার, রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা) আশ্রয়ের জন্য নিকটতম নিরাপদ স্থান কোথায় রয়েছে, সে তথ্য জানা থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ইসরালে বর্তমান নিরাপত্তা পরিবেশ জটিল এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল বলেও সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইসরায়েল। এই হামলায় ইরানের কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাসহ দুই জ্যেষ্ঠ পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, তেহরানে বিপ্লবী গার্ডের সদর দপ্তর ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমও ঘটনাস্থল থেকে আগুন এবং ধোঁয়া বের হওয়ার খবর দিচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী টাইমস অব ইসরায়েল পত্রিকাকে জানিয়েছে, তারা ‘নেশন অব লায়ন্স’ নামের একটি বিমান অভিযানের মাধ্যমে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। তাদের ভাষ্যমতে, ইরান থেকে আসা তাৎক্ষণিক হুমকির জবাবে এই অভিযানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক স্থাপনায় হামলা পরিচালনা করা হয়েছে। যতক্ষণ না আমরা আমাদের মিশন শেষ না হয়, ততক্ষণ এই অভিযান চলবে।
এদিকে নেতানিয়াহুর সরকার ইসরায়েলজুড়ে ‘বিশেষ জরুরি অবস্থা’ জারির ঘোষণা দিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ওপর সম্ভাব্য ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার শঙ্কায় ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে আগাম প্রতিরোধমূলক হামলা চালানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, এই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র কোনোভাবেই জড়িত নয়। আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হলো মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত মার্কিন সেনাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। তিনি ইরানকে সতর্ক করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থ বা সেনাবাহিনীর ওপর হামলা চালানো হলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।
এদিকে ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। গত কয়েক ঘণ্টায় ইরান ইসরায়েলে ১০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী সেগুলো ভূপাতিত করার চেষ্টা করছে। শুক্রবার (১৩ জুন) সকালে এ তথ্য জানায় দ্য টাইমস অব ইসরায়েল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা ভিডিওতে ইরানি ড্রোনগুলোকে ইসরায়েলের দিকে যাত্রা করতে দেখা গেছে।