বিশ্ব

‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন না করলে ইরানও করবে না’

‘ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন না করলে ইরানও করবে না’


যুদ্ধ নয়, শান্তি- তবে জাতীয় স্বার্থে কোনো আপস নয়। এমন বার্তা দিয়ে নতুন করে কূটনৈতিক ভারসাম্য রক্ষার ইঙ্গিত দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম নূরনিউজ-এর বরাত দিয়ে আল জাজিরা প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান জানিয়েছেন- ইসরায়েল যদি যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন না করে, ইরানও সেই চুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না। যদি আমাদের ওপর আক্রমণ না আসে, তাহলে আমরা কারও বিরুদ্ধে আগ্রাসী হবো না। তবে আলোচনার টেবিলে বসেও আমরা কখনোই ইরানি জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দেব না।

মাসুদ পেজেশকিয়ান একদিকে যেমন শান্তিপূর্ণ কূটনীতির পক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন, অন্যদিকে তিনি জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কোনো ধরনের নতি স্বীকার করবেন না বলেও সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা সংলাপের পথ খোলা রাখতে চাই। তবে আলোচনার টেবিলেও আমরা দুর্বলতা দেখাব না। বিশ্লেষকদের মতে, এটি ইরান সরকারের তরফ থেকে পশ্চিমা বিশ্বকে একটি স্পষ্ট বার্তা- আগ্রাসন না হলে শান্তি সম্ভব, তবে চাপ প্রয়োগ করে কিছু আদায় যাবে না।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ঘোষিত যুদ্ধবিরতি ইরানে সরকারপক্ষ এক ধরনের কূটনৈতিক ‘জয়’ হিসেবেই দেখছে।

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেন, এই যুদ্ধবিরতি প্রমাণ করেছে, ইরান যুক্তরাষ্ট্র ও তার পশ্চিমা মিত্রদের শিং ভেঙে দিয়েছে। আমাদের সক্ষমতা পুরো অঞ্চলে এখন আরও দৃশ্যমান।

ইরানের পার্লামেন্টের স্পিকার এবং আইআরজিসির সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ বাঘের গালিবাফের শীর্ষ উপদেষ্টা মেহদি মোহাম্মাদি একে বলেন- এটি এক ঐতিহাসিক বিজয়। একটি নতুন যুগ শুরু হয়েছে। তিনি এই মন্তব্যটি দিয়েছেন এক্স (সাবেক টুইটার)-এ।

একই দিনে, ইরানের পারমাণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কেউ উৎপাটন করতে পারবে না।

তিনি আরও যোগ করেন, আমাদের যে প্রযুক্তি ও সক্ষমতা রয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়- এই কর্মসূচি অটল থাকবে এবং কোনোভাবেই থামানো যাবে না।

ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের প্রতিক্রিয়া এবং পারমাণবিক শক্তি নিয়ে জোরালো অবস্থান একত্রে ইঙ্গিত দেয়- তেহরান এবার ‘শান্তিপূর্ণ শক্তির’ নীতি গ্রহণ করতে চায়।

তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শান্তির বার্তা দীর্ঘস্থায়ী হবে কি না, তা নির্ভর করছে ইসরায়েলের পরবর্তী পদক্ষেপ এবং আন্তর্জাতিক কূটনীতির গতিপথের ওপর।

তবে আপাতত, মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের এই অবস্থান অঞ্চলটিতে অস্থিরতা ও সংঘাতের বিপরীতে একটি সম্ভাব্য কূটনৈতিক পথ খোলা রাখল।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।