বিশ্ব

ঈদের দিনে কোরবানি নয়, গাজায় চলবে ক্ষুধা আর কান্নার উৎসব

ঈদের দিনে কোরবানি নয়, গাজায় চলবে ক্ষুধা আর কান্নার উৎসব


ঈদ মানেই খুশি, উৎসব আর ত্যাগের মহিমা। কিন্তু ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ঈদুল আজহা এবার আসছে শুধুই কান্না, ক্ষুধা আর রক্তের স্মৃতি বয়ে। ইসরায়েলের প্রায় দুই বছর ধরে চলা অব্যাহত হামলা ও অবরোধে বিধ্বস্ত এই ভূখণ্ডে ঈদের ছোঁয়াও যেন নিষিদ্ধ হয়ে গেছে।

গাজার আকাশজুড়ে এখনও ধোঁয়া। বাতাসে এখনও বারুদের গন্ধ। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর পর থেকে ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণে নিহত হয়েছে ৫৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি, আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে সোয়া লাখ। শুধু হামলাই নয়, গাজায় প্রবেশ করা সব ধরনের ত্রাণ, খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আটকে দিয়ে এক বিভীষিকাময় অবরোধ সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল রাষ্ট্রটি।

এই নিষ্ঠুরতা ঈদের খুশিতেও ছায়া ফেলেছে। লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এ বছর গাজায় কোরবানির পশু প্রবেশের অনুমতি মেলেনি। গাজার প্রাণী ব্যবসায়ী ও খামারিরা বলছেন, সীমিত সংখ্যক পশু থাকলেও সেগুলোর দাম এত বেশি যে, সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে।

গাজার বাসিন্দা আবু হাতিম আল-জারকা জানান, গত বছরের অক্টোবর থেকে কোনো পশু গাজায় আসেনি। যে কয়টি পশু আছে, সেগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় পানি পর্যন্ত জোগাড় করতে পারছেন না। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই এলাকায় পশুপালনও প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

ফলে এবারের ঈদে কোরবানির তো প্রশ্নই ওঠে না। বরং অধিকাংশ ফিলিস্তিনি পরিবার হয়তো একটি টুকরো মাংস দেখার স্বপ্নটুকুও দেখতে পারবে না। বাস্তুচ্যুত বহু ফিলিস্তিনি জানিয়েছেন, তারা ঈদের কোনো প্রস্তুতি নিতে পারেননি। খোলা আকাশের নিচে, খাদ্যবিহীন অবস্থায় ঈদের নামাজ পড়ার পর দিনের বাকি সময়টুকু কাটবে অনাহারে।

গাজার বাজারগুলোতেও নেই কোনো উৎসবের আমেজ। ইসরায়েলের আরোপিত দুর্ভিক্ষের বাস্তবতায় খাদ্য ও সবজির দাম অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। অনেকেই মাসের পর মাস মাংসের মুখ দেখেননি।

এই বাস্তবতায় গাজার মানুষের কাছে ঈদ মানে শুধু একটুখানি বেঁচে থাকার চেষ্টা। কোরবানির পশুর বদলে তারা ত্যাগ করছেন আর্তনাদ, উৎসবের বদলে শুনছেন শোকের সুর। এ যেন ঈদের দিনেও মৃত্যু আর ক্ষুধার সঙ্গে এক অসহায় জনগোষ্ঠীর নীরব যুদ্ধ।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।