জেন-জি প্রজন্মের দুই দিনের ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে আজ মঙ্গলবার পদত্যাগ করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি। তবে কে পি শর্মার পদত্যাগের পরও তার নেতৃত্বাধীন সরকারের চূড়ান্ত পতন হয়নি।
কারণ নেপালের সংবিধান অনুসারে, প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকারের নির্বাহী প্রধান। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপতি হলেন সরকারপ্রধান। ফলে বর্তমান রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাওদেল যতক্ষণ পর্যন্ত পদত্যাগ না করছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত দাপ্তরিকভাবে সরকারপতন সম্ভব নয়।
তবে সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাওদেলও শিগগিরই পদত্যাগ করবেন এবং প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ ও সরকারের চূড়ান্ত পতন এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
ফেসবুক, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম অ্যাপে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় রোবাবর রাজধানী কাঠামান্ডুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। ‘হামি নেপাল’ নামের একটি তরুণদের সংগঠন এই বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল। শুরু থেকেই বিক্ষোভের নেতৃত্বে ছিলেন বিশ্ববিদ্যাল-কলেজ-স্কুলের শিক্ষার্থী ও তরুণ প্রজন্ম।
রোববারের পরের দিন সোমবার বিক্ষোভ ব্যাপক আকার নেয়। পরিস্তিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহনী মোতায়েন করে সরকার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এদিন নিহত হয়ে ২৫ জন বিক্ষোভকারী।
বিক্ষোভ প্রশমনে গতকালই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিল সরকার। কিন্তু ততক্ষণে জনবিক্ষোব তীব্র সরকারবিরোধী আন্দোলনে মোড় নিয়ে ফেলেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গতকাল রাজধানী কাঠমান্ডু এবং ললিতপুর ও ভক্তপুর- তিন জেলায় কারফিউ জারি করে সরকার।
আজ সোমবার কারফিউ উপেক্ষা করে সড়কে নামে জনতা এবং নেপালের মন্ত্রীদের সরকারি বাসভবন, পার্লামেন্ট, সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। ভাঙচুর চালানো হয় প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি এবং রাষ্ট্রপতি রাম চন্দ্র পাওদেলের সরকারি বাসভবনেও।
এমন পরিস্থিতিতেই আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুরের পর পদত্যাগপত্র জমা দেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি।