বিশ্ব

কাশ্মীরে হামলাকারী কারা, পাকিস্তানের সঙ্গে কী সম্পর্ক?

কাশ্মীরে হামলাকারী কারা, পাকিস্তানের সঙ্গে কী সম্পর্ক?


ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় তোলপাড় গোটা দেশ। এ হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামে স্বল্প পরিচিত এক জঙ্গি গোষ্ঠী।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করছে, হামলাকারী ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্সের’ সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ক রয়েছে। ফলে নতুন করে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স নামের গোষ্ঠীটি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা এক বার্তায় হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা ভারতের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছে, ৮৫,০০০ এরও বেশি বহিরাগত এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছে। যা জনসংখ্যাগত পরিবর্তন ঘটাচ্ছে।

বুধবার (২৩ এপ্রিল) এক নতুন বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি বলেছে, লক্ষ্যবস্তু করা ব্যক্তিরা সাধারণ পর্যটক ছিলেন না। বরং তারা ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থার সাথে যুক্ত এবং তাদের হয়ে কাজ করছিলেন।

গোষ্ঠীটি আরও বলেছে, আক্রান্তরা সাধারণ পর্যটন গোষ্ঠী ছিল না বরং তারা গোপন সংস্থার লোক ছিল। সেখানে পর্যটকের বেশে গবেষণার দায়িত্বে ছিলেন তারা। এই আক্রমণটি শুধু দিল্লির জন্যই নয় বরং দিল্লির সন্দেহজনক কৌশলগুলোকে সমর্থনকারীদের জন্যও একটি সতর্কবার্তা হিসাবে কাজ করবে।

দুটি নিরাপত্তা সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, হামলার পরপরই শত শত নিরাপত্তা বাহিনী পাহেলগাম এলাকায় ছুটে যায় এবং সেখানকার বনাঞ্চলে চিরুনি অভিযান শুরু করে। অতীতে জঙ্গিদের প্রতি সহানুভূতিশীল বলে সন্দেহ করা প্রায় ১০০ জন কাশ্মীরিকে পুলিশ স্টেশনে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করা হচ্ছে তা অস্পষ্ট।

ভারতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বলেছে, কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামেও ভারতীয় সংস্থাগুলোর কাছে পরিচিত। তারা লস্কর-ই-তৈয়বা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের মতো পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর একটি ফ্রন্ট।

টিআরএফের উত্থান হয় ২০১৯ সালে। তখন সংবিধান থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে নরেন্দ্র মোদি কাশ্মীরের আংশিক স্বায়ত্তশাসন প্রত্যাহার করেন। কাশ্মীরিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম জাগ্রত রাখতে সংগঠনটি জীবন-মরন কর্মসূচি গ্রহণ করে।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, সন্ত্রাসীদের নিয়োগ, সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ এবং পাকিস্তান থেকে জম্মু ও কাশ্মীরে অস্ত্র ও মাদক পাচারের প্রচারণার জন্য বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের অধীনে টিআরএফকে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে ঘোষণা করে।

বিভিন্ন ঘটনায় টিআরএফ আলোচনায় এলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পাকিস্তানের যোগসূত্র খুঁজতে মরিয়া হয়ে উঠেপড়ে লাগে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

পাকিস্তান বলে আসছে, তারা কাশ্মীরে বিদ্রোহকে কেবল নৈতিক এবং কূটনৈতিক সমর্থন প্রদান করে। কোনো জঙ্গি গোষ্ঠীর কার্যক্রমে পাকিস্তানের হাত নেই।

তবে এবার পহেলগামে হামলার পর পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র শাফকাত আলী খান যে মন্তব্য করেছেন তাতে টিআরএফ নিয়ে কোনো বক্তব্য নেই। তিনি বলেছেন, পাকিস্তান এই ঘটনায় দুঃখিত এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে। ভারতের অবৈধভাবে অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলায় এক হামলায় পর্যটকদের প্রাণহানির ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। আমরা নিহতদের নিকটাত্মীয়দের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।