ভারতের কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তইবার ছায়া সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ)। গোষ্ঠীটি হামলার পর দায় স্বীকার করেছে। এটি ২০০৮ সালের পর দেশটিতে চালানো সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা। এ ঘটনায় টিআরএফ কারা তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে গোষ্ঠীটির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) কারা?
গঠন ও পরিচয় : ২০১৯ সালে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) আত্মপ্রকাশ করে। দিল্লিভিত্তিক থিঙ্ক ট্যাংক ‘সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের’ তথ্যমতে, এটি পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই-তইবার (এলইটি) একটি শাখা।
সামাজিক মাধ্যমে উপস্থিতি : গোষ্ঠীটি অনলাইনে টিআরএফ ‘কাশ্মীর রেজিসটেন্স’ নামে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। পহেলগামে হামলার দায় স্বীকার করে তারা টেলিগ্রাম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে বিবৃতি দিয়েছে।
লশকর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যোগসূত্র : যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন এলইটিকে ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলাসহ ভারত ও পশ্চিমা দেশে একাধিক হামলার জন্য দায়ী করা হয়। টিআরএফকে এ গোষ্ঠীর একটি ‘মুখপাত্র’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন বিশ্লেষকরা।
সাউথ এশিয়া টেররিজম পোর্টালের প্রধান অজয় সাহনী জানান, গত কয়েক বছরে এসব গোষ্ঠী তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তান যখন ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের (এফএটিএফ) চাপে পড়ে এবং দেশটি যখন জম্মু ও কাশ্মিরে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকারের চেষ্টা করছিল, তখন এই ধরনের সংগঠনের উত্থান হয়েছে।
টিআরএফের কর্মকাণ্ড
সাহনীর মতে, গোষ্ঠীটির নামে এখন পর্যন্ত বড় কোনও হামলার নজির নেই। তবে তাদের বেশিরভাগ অপারেশনই লশকর-ই-তইবার পরিকল্পিত এবং অনুমোদিত। গোষ্ঠীটি স্থলে যেখানে হামলা চালিয়েছে তার নির্দেশনা দিয়েছে লশকর-ই-তইবা।
ভারতের বক্তব্য কী?
২০২৩ সালে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংসদে জানিয়েছিল, টিআরএফ কাশ্মীরে নিরাপত্তা বাহিনী ও সাধারণ মানুষের উপর হামলার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও, তারা অস্ত্র ও মাদক চোরাচালান এবং সন্ত্রাসীদের নিয়োগে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত দুই বছর ধরে টিআরএফ অনলাইনে ভারতপন্থি সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে হুমকি দিয়ে আসছে।
পাকিস্তানের অবস্থান
কাশ্মীরে সন্ত্রাসীদের সমর্থন এবং অর্থায়নের বিষয়টি অস্বীকার করে আসছে পাকিস্তান। দেশটির দাবি, তারা কাশ্মীর ইস্যুতে কেবল নৈতিক ও কূটনৈতিক সমর্থন দেয়, কোনও সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত নয়।