মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ সফরে বেরিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বর্তমানে তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাতে অবস্থান করছেন। দেশটিতে পৌঁছালে তাকে খোলা চুলে খালেগি নাচের মাধ্যমে স্বাগত জানিয়েছে আমিরাতের মেয়েরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার তাকে বহনকারী বিমান আমিরাতে পৌঁছেছে। এ সময় তাকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানান আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান। দেশটিতে পৌঁছালে মেয়েরা তাকে ঐতিহ্যবাহী চুল খোলা খালেগি নাচে স্বাগত জানান।
ট্রাম্পের যোগাযোগ উপদেষ্টা মার্গো মার্টিন এ-সংক্রান্ত একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন। এ দেখা যায়, ট্রাম্প যখন হেঁটে যাচ্ছেন তখন আমিরাতের মেয়েরা তাকে খোলা চুলে মাথা ঝাঁকিয়ে স্বাগত জানাচ্ছেন।
এদিকে ট্রাম্পকে যখন মধ্যপ্রাচ্যে এভাবে স্বাগত জানানো হচ্ছে ঠিক তখই নাকবা দিবসের ৭৭তম বর্ষপূর্তি পালন করেছে গাজা। উপত্যকায় এদিন ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর সর্বশেষ হামলায় ১০৩ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। গত ১৯ মাস ধরে চলা নিরবচ্ছিন্ন বোমা হামলার ফলে এই মৃত্যুর সংখ্যা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এই হামলার সময় ফিলিস্তিনিরা নাকবার ৭৭তম বার্ষিকী পালন করছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র গঠনের সময় জায়নবাদী সামরিক গোষ্ঠীগুলোর হাতে ৭ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি জোরপূর্বক উচ্ছেদ হয়েছিল, যা নাকবা বা ‘মহাবিপর্যয়’ নামে পরিচিত।
আল জাজিরার সাংবাদিক তারেক আবু আজ্জুম দেইর এল-বালাহ থেকে জানিয়েছেন, গাজায় এটি ‘আরেকটি রক্তাক্ত দিন’। তিনি বলেন, ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান খান ইউনিস শহরে কোনো সতর্কতা ছাড়াই ৯টি বাড়ি সরাসরি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকটি পরিবার সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।
নাকবা দিবস (আরবি : يوم النكبة, ইওম আন-নাকবা, অর্থ ‘বিপর্যয়ের দিন’) প্রতি বছর ১৫ মে পালিত হয়। এদিন ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় ফিলিস্তিনি আরবদের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতি, জাতিগত নির্মূল, এবং তাদের সমাজ, সংস্কৃতি ও পরিচয়ের ধ্বংসের স্মরণে পালন করা হয়। এই ঘটনাকে ফিলিস্তিনিরা ‘নাকবা’ বা ‘বিপর্যয়’ হিসেবে অভিহিত করে।
১৯৪৮ সালের আরব ইসরায়েল যুদ্ধের সময় প্রায় ৭,৫০,০০০ ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয় বা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, যারা পরে উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়। এই দিনটি ফিলিস্তিনিদের জন্য তাদের অধিকার, বিশেষ করে উদ্বাস্তুদের ফিরে আসার অধিকার (Proper of Return), এবং স্বাধীনতার দাবির প্রতীক হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।
The welcome ceremony in UAE continues! pic.twitter.com/sXqS1IboMN
— Margo Martin (@MargoMartin47) May 15, 2025