বিশ্ব

গাজায় আগ্রাসনে নেমে নিহত সাত ইসরায়েলি সেনা

গাজায় আগ্রাসনে নেমে নিহত সাত ইসরায়েলি সেনা


ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসের হামলায় সাত ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।

বুধবার (২৫ জুন) ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। গত কয়েক মাসের মধ্যে এটি ইসরায়েলি বাহিনীর জন্য অন্যতম ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা।

নিহত সেনারা সবাই ৬০৫তম কমব্যাট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যাটালিয়নের সদস্য ছিলেন। মঙ্গলবার (২৪ জুন) খান ইউনিস এলাকায় তারা একটি সামরিক যান নিয়ে টহল দিচ্ছিলেন।

এ সময় হামাস যোদ্ধারা তাদের গাড়িতে বোমা পেতে রাখে, যার বিস্ফোরণে গাড়িটি আগুন ধরে পুড়ে যায় এবং সাতজন সেনারই মৃত্যু হয়। ঘটনার দায় স্বীকার করেছে হামাস। খবর দ্য গার্ডিয়ানের

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডেফরিন বলেন, ঘটনাস্থলে উদ্ধারকারী দল ও হেলিকপ্টার পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সেনাদের বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

তিনি জানান, নিহত সেনারা ওই এলাকায় হামাসের সুড়ঙ্গ ও অবস্থান লক্ষ্য করে ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছিল। উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে নিহত সেনার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৭৯ জনে।

অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, ৭ অক্টোবরের পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

এছাড়াও মঙ্গলবার গাজায় খাদ্য সহায়তা নিতে আসা আরও অন্তত ৪০ জন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় পরিচালিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামক একটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম চলাকালে এই হামলা হয়।

জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা অভিযোগ করেছে, জিএইচএফ-এর কার্যক্রম নিরপেক্ষতা ও মানবিক নীতিমালার পরিপন্থি এবং এর মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর অনেকেই আশা করেছিলেন গাজায়ও হয়তো শান্তি ফিরবে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমাদের ইরানে চালানো হামলা গাজা যুদ্ধের আলোচনায় একটি শক্ত অবস্থান দেখিয়েছে। আশা করি ভালো কিছু হবে।

তবে ইসরায়েল সরকার এখনো গাজায় যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে নয়। কট্টরপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোত্রিচ দাবি করেছেন, আরও দুই মাস সময় পেলেই আমরা হামাসকে সম্পূর্ণ পরাজিত করতে পারি।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে যুদ্ধবিরতির দাবি জোরালো হচ্ছে। পার্লামেন্ট সদস্য মোশে গাফনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, আমি এখনো বুঝতে পারছি না কেন আমরা এই যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এখানে ট্রাম্পের মতো কেউ দরকার, যে এসে বলবে- ‘ঠিক আছে, এবার শেষ।’

প্রসঙ্গত, গাজায় এখনও প্রায় ৫০ জন ইসরায়েলি জিম্মি অবস্থায় রয়েছে, যাদের মধ্যে ৩০ জনের জীবিত থাকার সম্ভাবনা কম। সর্বশেষ যুদ্ধবিরতির খসড়ায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, বেঁচে থাকা জিম্মিদের অর্ধেক এবং মৃতদের দেহ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব ছিল, তবে চূড়ান্ত কোনো সমঝোতা হয়নি।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।