বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক বিশ্লেষক রবিন্দর সাচদেব।
তার মতে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং উভয় দেশের স্বার্থেই এখন এই সম্পর্ককে আরও গভীর ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করার সময় এসেছে।
শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাচদেব বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক আবারও স্থিতিশীল হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে এবং বাংলাদেশও সম্ভবত আরও পররাষ্ট্রনৈতিকভাবে পারদর্শী হয়ে উঠছে।
তিনি ভারতের পক্ষ থেকে অনুসৃত ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতিকে এই স্থিতিশীলতার অন্যতম কারণ হিসেবে তুলে ধরেন। সাচদেবের ভাষায়, ভারত একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও অনুমানযোগ্য খেলোয়াড়। আমাদের নীতি পেন্ডুলামের মতো দোলাচলে থাকে না। এর ফলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখা সম্ভব হয়।
বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বার্থেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এবং ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক আদান-প্রদান বাড়ানো জরুরি। ভারত এর জন্য প্রস্তুত।
দুই দেশের মধ্যে আরও বেশি আলোচনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে সাচদেব বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত, যার মধ্যে অন্যতম হলো বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতার মতো বিষয়।
এর আগে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বাংলাদেশের সঙ্গে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে ভারতের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।
এক নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে একটি ইতিবাচক, গঠনমূলক সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী। আমরা একটি গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশের পক্ষে আছি।
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্টে বাংলাদেশে ব্যাপক বিক্ষোভ ও রাজনৈতিক চাপের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পদত্যাগ করে। পরবর্তী সময়ে নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ক্ষুদ্রঋণ আন্দোলনের প্রবর্তক ইউনূসের ওপর এখন রয়েছে রাজনৈতিক সংস্কার এবং জাতীয় ঐক্য পুনর্গঠনের বড় দায়িত্ব।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন একটি সময়েই যখন বাংলাদেশ নিজেকে নতুন পথে চালিত করছে, তখন আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিমণ্ডলেও দেশটির অবস্থান আরও সুসংহত ও পরিণত হয়ে উঠছে।
ভারতীয় বিশ্লেষকদের দৃষ্টিতে, এ এক নতুন বাংলাদেশের উত্থান- যা দক্ষিণ এশিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।