আকাশ থেকে নামছে বান্ডেল বান্ডেল নোট, যা দেখে বিস্মিত সবাই। ঘটনা শুক্রবার (২৭ জুন) দুপুরের। হঠাৎ করেই আকাশে একটি হেলিকপ্টার চক্কর দিতে শুরু করে এবং অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই আকাশ থেকে বৃষ্টি মতো করে পড়তে থাকে নগদ টাকা! এমনই এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সাক্ষী হলো যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েট শহরের ইস্ট সাইড।
এই ঘটনাটি কোনো সিনেমা বা বিজ্ঞাপনের দৃশ্য নয়—বরং এটি ছিল সম্প্রতি প্রয়াত স্থানীয় ব্যবসায়ী ড্যারেল প্ল্যান্ট থমাসের শেষ ইচ্ছা। জীবদ্দশায় একটি কার ওয়াশের মালিক ও স্থানীয়দের কাছে অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
লিসা নাইফ নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী, যিনি কাছাকাছি অবস্থিত একটি সার্ভিস সেন্টারে কাজ করেন, বলেন, ‘এটা ছিল তার শেষ উপহার, তার কমিউনিটির জন্য ভালোবাসা প্রকাশের এক অভিনব পদ্ধতি এবং আমি বলব, তিনি তার উদ্দেশ্যে পুরোপুরি সফল হয়েছেন।’
হেলিকপ্টারটি কয়েক মিনিট ধরে এলাকায় ঘোরাফেরা করে এবং তারপর শুরু হয় টাকার বর্ষণ। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, হাজার হাজার ডলার মূল্যের নোট মাটিতে পড়তে থাকে, আর লোকজন তা ধরতে রীতিমতো ছুটে আসে। কেউ বেরিয়ে আসে গাড়ি থেকে, কেউ দোকান থেকে, কেউবা দৌড়ে আসে আশপাশের এলাকা থেকে। তারা উপর থেকে পড়া নোট কুড়াতে শুরু করেন। পুরো এলাকাটিই যেন হঠাৎ একটি উৎসবে পরিণত হয়।
তবে অবাক করা বিষয় হলো—এই বিশাল ভিড়েও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি। ডেট্রয়েট পুলিশ সাময়িকভাবে ট্রাফিক বন্ধ রাখলেও ঘটনাটি ছিল একেবারে সুশৃঙ্খল।
স্থানীয় একটি খাবারের দোকানের কর্মী আনায়া টনি বলেন, ‘মানুষের সংখ্যা ছিল অবিশ্বাস্য, কিন্তু পরিস্থিতি ছিল চমৎকার। সবাই কিছু না কিছু পেয়েছে।’
এদিকে ড্যারেল থমাসের ছেলে স্মোক জানান, এই উদ্যোগটি ছিল তার বাবার শেষ ইচ্ছা পূরণ এবং একটি বার্তা দেওয়ার জন্য : ‘হয়তো আপনারা আমার বাবাকে চিনতেন না, কিন্তু তিনি ছিলেন অসাধারণ একজন মানুষ। তার সম্প্রদায়ের কাছে তিনি ছিলেন একজন জীবন্ত কিংবদন্তি। এই কাজ তার পক্ষ থেকে সবাইকে শেষ আশীর্বাদ।’
ঘটনাটি দ্রুত সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। ইনস্টাগ্রামে ভিডিও পোস্ট হওয়ার পর নানা মন্তব্যে ভরে যায়। একজন লেখেন, ‘এই ধরনের বৃষ্টি তো আমাদের প্রয়োজন!’ আরেকজন রসিকতা করে বলেন, ‘আমি তো বিছানার চাদর নিয়ে ছুটেছিলাম!’
আরেকজন বলেন, ‘একজন মানুষ মৃত্যুর পরেও যদি অপরিচিতদের কথা ভাবেন, তবে বুঝে নিতে হবে তিনি কতটা উদার হৃদয়ের ছিলেন।’ কেউ কেউ আরও বলেন, ‘এটা-ই তো আসল ডেট্রয়েট—ভালোবাসা, উদারতা আর ঐক্যের প্রতীক।’
সূত্র: কসোভা প্রেস