বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, আল্লাহ জালেমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না।
বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) সকালে রাজধানীর মিরপুরের কাফরুলের ইব্রাহিমপুরে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ পক্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা উত্তর আয়োজিত গণসংযোগ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান পতিত আওয়ামী লীগের দিকে ইঙ্গিত দিয়ে বলেছেন, তারা ক্ষমতার দম্ভে মানুষের ওপর লাগামহীন জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা না করে হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, জেল-জুলম, গুপ্তহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। তারা মনে করেছিল যে, তাদের এমন অপশাসন ও দুঃশাসন কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। কিন্তু আল্লাহ জালেমদের ছাড় দিলেও ছেড়ে দেন না। মূলত, আমাদের ওপর আল্লাহর সাহায্য এসেছে। স্বৈরাচারের সাজানো গুছানো তখতে তাউস বালির বাঁধের মতো তছনছ হয়ে গেছে। তাই এ বিজয়কে অর্থবহ ও টেকসই করতে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে জামায়াতে আমির বলেন, মহান আল্লাহই সর্বময় ক্ষমতার মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন এবং ইচ্ছামতো কেড়েও নেন। তিনিই মহান সত্তা যিনি যাকে ইচ্ছা সম্মানিত করেন; আবার বেইজ্জতিও করেন। তা আমরা জুলাই বিপ্লবে সরাসরি প্রত্যক্ষ করেছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক প্রমুখ।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামীর নিজস্ব কোনো অ্যাজেন্ডা নেই বরং আমরা বিশ্ব নবী (সা.) যে ইনসাফভিত্তিক, বৈষম্যমুক্ত ও শান্তির সমাজ কায়েম করেছিলেন তেমনি একটি ইনসাফপূর্ণ ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। জামায়াত দেশ ও জাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্য দীর্ঘ পরিসরে আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেশে একটি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, আমরা দেশ, দেশের মাটি ও মানুষকে ভালোবাসি। মানুষের কল্যাণ ও মুক্তিই হচ্ছে জামায়াতের রাজনীতি মূলনীতি। মূলত, আল্লাহ আমাদেরকে আশরাফুল মাখলুকাত হিসাবে সৃষ্টি করেছেন। আর সৃষ্টির সেরা জীব হিসাবে আমাদের দায়িত্ব হলো ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা বিধান করা। চিড়িয়াখানার পশু-পাখি আল্লাহর অধীনে ও মানুষের নিয়ন্ত্রণে খুবই সুশৃঙ্খল। আর মানুষের ক্ষমতা কোনোভাবেই আনলিমিটেড নয়; আল্লাহ তায়ালাই সর্বময় ও নিরঙ্কুশ ক্ষমতার অধিকারী। তাই দুনিয়ায় শান্তি ও আখেরাত মুক্তি লাভ করতে হলে আমাদের সকলকে কোরআন-সুন্নাহর আদর্শের দিকে ফিরে আসতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় সকল সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান।
আমিরে জামায়াত আরো বলেন, আল্লাহ বাব্বুল আল আমিন আমাদের সকলের ওপর দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা চালানোকে অত্যাবশ্যকীয় করে দিয়েছেন। যুগে যুগে নবী-রাসুলগণ একই দায়িত্ব নিয়ে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়েছিলেন। বিশ্বনবী (সা.) একই মিশনে নিয়ে দুনিয়াতে প্রেরিত হয়ে একটি সফল বিপ্লব সাধন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি এ কাজ সুসম্পন্ন করেছিলেন তার ওপর অবতীর্ণ অহির বিধানের মাধ্যমে। কিন্তু তিনি শেষ নবী হওয়ায় দুনিয়াতে নতুন করে আর কোন অহী আসবে না। কিন্তু বিশ্বনবী (সা.)-এর উপর নাজিলকৃত কোরআনে মানবজীবনের সকল সমস্যার সমাধান দেওয়া হয়েছে। তাই আমাদের প্রত্যেককেই বাস্তবজীবনে কুরআনের আদর্শের অনুসারী হয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।