ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ভাইস-প্রেসিডেন্ট (ভিপি) পদে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৭০৮ ভোট পেয়ে হেরেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান। এরপর পরবর্তী ডাকসু নির্বাচন নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নিজের ফেসবুকে তিনি এ-সংক্রান্ত পোস্ট দেন।
পোস্টে আবিদুল লিখেন, সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসব, ইনশাআল্লাহ। এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।
তিনি লেখেন, ক্ষুদ্র জীবনে আমি এতদূর আসব কোনোদিন ভাবিনি। নির্বাচনের আগের রাতে খালেদ মুহিউদ্দিন ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই? আমি কোনো সদুত্তর দিতে পারিনি। আসলে কখনোই জানতাম না নিজেকে কোথায় দেখতে হবে। একের পর এক আন্দোলন-সংগ্রাম এসেছে, নিজেকে রাজপথে সঁপে দিয়েছি। সেই পথই আজ আমাকে এতদূর নিয়ে এসেছে।
তিনি জানান, নির্বাচনের দিন শুরু হয় মিডিয়ার অপপ্রচার দিয়ে। দুপুর থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে একের পর এক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। এসব অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও যথাযথ সিদ্ধান্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে আসবে বলে তিনি এখনো আশা করছেন।
আবিদ লিখেছেন, মানুষ হিসেবে আমরা কেউ পরিপূর্ণ নই। আমি জানি, আমি আপনাদের জন্য যথেষ্ট কাজ করতে পারিনি। সত্যি বলতে জীবন আমাকে সেই সুযোগটুকুও দেয়নি।
ওই পোস্টে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোট দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান আবিদ। তিনি জানান, মাত্র ২০ দিনের ক্যাম্পেইনে তিনি চেষ্টা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছাতে। তবে সবাইকে ছুঁতে না পারলেও তিনি আশ্বাস দেন, আমার যাত্রা এখানেই শেষ নয়, আমার যাত্রা আরও দীর্ঘ। আমি এখনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের একজন ছাত্রনেতা।
আবিদ লিখেন, নির্বাচনী ইশতেহারে যা কিছু ছিল, তা একজন ছাত্রনেতা হিসেবেই প্রশাসনের কাছ থেকে আদায় করে নিতে তিনি কাজ করবেন। তার ভাষায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতির নতুন শুরুটা আমাদের হাত ধরেই হবে। আমরা অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রাজপথ পাহারা দেব। নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে সমগ্র বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবো। ইনশাআল্লাহ, এর প্রতিফলন আপনারা পরবর্তী ডাকসুতে দেখতে পাবেন। আবিদ আপনাদের কখনো ছেড়ে যাবে না।
পরিশেষে তিনি মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের একটি উক্তি উল্লেখ করেন, ‘We should settle for finite disappointment, however by no means lose infinite hope.’
বাংলায় এর অর্থ, ‘আমাদের সীমিত হতাশাকে মেনে নিতে হবে, কিন্তু অসীম আশাকে কখনো হারাতে নেই।’
এর আগে ডাকসু নির্বাচনের ফল ঘোষণার আগমুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফল প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণা দেন ছাত্রদলের সমর্থিত ভিপি প্রার্থী মো. আবিদুল ইসলাম খান।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ স্ট্যাটাস দেন তিনি। আবিদ লেখেন, ‘পরিকল্পিত কারচুপির এই ফলাফল দুপুরের পরপরই অনুমান করেছি। নিজেদের মতো করে সংখ্যা বসিয়ে নিন। এই পরিকল্পিত প্রহসন প্রত্যাখ্যান করলাম।’
এর আগে সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ আনে তিনি। আবিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই নির্বাচন পরিপূর্ণভাবে হাসিনা ফ্যাসিস্টের নির্বাচনকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই নির্বাচন পরিপূর্ণভাবে কারচুপির নির্বাচনে রূপান্তরিত হচ্ছে।’