রাজনীতি

কোনো সরকার বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করতে পারেনি : এবি পার্টি

কোনো সরকার বিশুদ্ধ খাবার পানি নিশ্চিত করতে পারেনি : এবি পার্টি


রাজধানীতে ওয়াসার পানিতে ভয়াবহ ইকোলাই ভাইরাস পাওয়ার পরও ওয়াসা নির্বিকার বলে উদ্বেগ জানিয়েছে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।

দলটির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ওয়াসার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে যেসব দুর্নীতিবাজ কেঁচো বা পোকামাকড় বসে আছে তাদের অপসারণ ব্যতীত নগরবাসীকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ওয়াসার পানিতে কেঁচো বা এই ধরনের পোকামাকড় পাওয়া যাচ্ছে। সে সঙ্গে রয়েছে ময়লা এবং দুর্গন্ধ। গত ফ্যাসিবাদের সময় ২২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েছিল ওয়াসার লুটেরা এমডি তাসকিন আহমেদ। যার পুরোটাই পানি শোধনের পরিবর্তে আওয়ামী লুটেরাদের পকেটে ঢুকেছে। প্রতি বছর পানি নিয়ে একই পরিস্থিতি বিরাজ করলেও এর কোনো সমাধান নেই। বছরের পর বছর ধরে কোনো সরকারই জনগণের মৌলিক অধিকার বিশুদ্ধ খাবার পানির নিশ্চয়তা তৈরি করতে পারেনি।

রোববার (২০ এপ্রিল) ‘ওয়াসার দূষিত পানি, ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে নগরবাসী’ বিষয়ে এবি পার্টি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে দূষিত পানির ভোগান্তি ও তার সমাধান বিষয়ে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসরীন সুলতানা মিলি। উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, এবিএম খালিদ হাসান, শ্যাডো বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার আব্বাস ইসলাম খান নোমান, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ লোকমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল বাসেত মারজান।

ওয়াসার দূষণ ও সমাধান নিয়ে বক্তব্যে মিলি বলেন, প্রতি বছরই গ্রীষ্মের শেষ এবং বর্ষার শুরুতেই ওয়াসার পানি হয়ে ওঠে নোংরা পোকামাকড়ের প্রজননক্ষেত্র। দূষণের পরিমাণ এতটাই বাড়ে যে, এটার কারণে রোগের প্রাদুর্ভাব প্রচণ্ডভাবে বেড়ে যায়। কিন্তু এটা নিয়ে কোনো দীর্ঘমেয়াদি সমাধান চিন্তা করা হয়নি। ২০১৯ সালে একজন আইনজীবীর রিটে হাইকোর্ট ডিভিশন ৭ দিনের মধ্যে জানতে চেয়েছিলেন ওয়াসার পানির স্যাম্পলে মল, মূত্র এবং অ্যামোনিয়ার উপস্থিতি কেন পাওয়া গিয়েছে? যার উত্তর আজ প্রায় ৭ বছরেও পাওয়া যায়নি, যা অনাকাঙ্ক্ষিত।

তিনি বলেন, ঢাকা শহরে শীতের পরেই শুরু হয় অপরিকল্পিত রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির প্রতিযোগিতা এবং তাতে প্রায়ই দেখা যায় সুয়ারেজ এবং পানির লাইন ফুটো হয়ে এক হয়ে গেছে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও উন্নয়নের ডামাডোল আর স্মার্ট বাংলাদেশের ভিড়ে আমরা একটি বিশুদ্ধ সুপেয় পানি সাপ্লাই চেইন স্থাপন করতে পারিনি, যা আমাদের সামগ্রিক ব্যর্থতা।

ওয়াসার আগের এমডি তাকসিম এ খানের মতো বর্তমান এমডিরও বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কোনো দৃশ্যমান কাজ করতে দেখিনি। হাজার হাজার নাগরিকের যেখানে ই-কোলাই জীবানু এবং পোকামাকড় দিয়ে পূর্ণ পানি খেয়ে নাভিশ্বাস ওঠার যোগাড় তখন ওয়াসার এমডির পক্ষ থেকে সমাধান তো দূরের কথা কোনো বক্তব্যও পাইনি। জুরাইন, মগবাজারসহ বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের এ নিয়ে ভোগান্তির শেষ নেই। রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি ব্যবহারের ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এই এলাকার বাসিন্দারা।

জুরাইনের স্থানীয় মসজিদের গভীর নলকূপ এখন শেষ ভরসা। সেখান থেকে নামমাত্র মূল্যে পানি কিনে তারা চলছেন বছরের পর বছর। ওয়াসার বিল দেওয়ার পরও এরকম নাগরিক ভোগান্তি জুলাই অভ্যুত্থানের স্পিরিটের সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা আহ্বান করছি, অবিলম্বে পানি এবং সুয়ারেজ লাইন কোথায় মিলিত হয়েছে চিহ্নিত করে তা ঠিক করুন।

দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ হিসেবে পানি ফিল্টার করার প্রযুক্তি ব্যবহার করা, ভালো সাপ্লাই চেইন মেনটেইন করা, পুরোনো লাইনগুলো রিপ্লেস করা, অবৈধ লাইনগুলো বন্ধ করা এবং সিটি করপোরেশনের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে রাস্তার কাজে হাত দিতে হবে যেন অপরিকল্পিত খোঁড়োখুঁড়িতে প্রতি বছরই সাধারণ মানুষ একই ভোগান্তিতে না পড়েন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির নেতা আহমেদ বারকাজ নাসির, রিপন মাহমুদ, আজাদুল ইসলাম আজাদ, শরণ চৌধুরী, মশিউর রহমান মিলু, আবু বকর সিদ্দিক, শাহিনুর আক্তার শীলা, সুলতান মোহাম্মদ আরিফসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।