বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন যদি জনগণ বলে পিআর লাগবে না, তাহলে আমরাও (জামায়াত) সেটাকে শ্রদ্ধা করি।
বৃহস্পতিবার (০৪ আগস্ট) বিকেল ৪টায় রাজধানীর ফার্মগেট বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটের থ্রিডি হলে এগ্রিকালচারিস্টস্ ফোরাম অব বাংলাদেশের (এএফবি) উদ্যোগে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন। এগ্রিকালচারিস্টস ফোরাম অব বাংলাদেশের সভাপতি ও সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. এটিএম মাহবুব ই ইলাহী (তাওহীদ) সভাপতিত্বে সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন মহাসচিব কৃষিবিদ শেখ মুহাম্মদ মাসউদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অন্তবর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, যে দলগুলো বেশিরভাগ ভোটার, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে তাদের কথা না শুনে কাদের কথায় পিআর পদ্ধতি দিতে চাচ্ছেন না। সেজন্য আমরা বলেছি, গণভোট দেন, গণভোটে যদি জনগণ পিআর চায়, তাহলে সকল দলকে মানতে হবে। যদি জনগণ বলে পিআর লাগবে না, তাহলে আমরাও (জামায়াত) সেটাকে শ্রদ্ধা করি।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আমরা এখনো সংশয়ের মধ্যে আছি। সরকার গতকাল (বুধবার) আমাদের কাছে একটা খসড়া চেয়েছে যে, এটার আইনি পথ দেখান। গতকাল রাতেই আমরা মিটিং করে একটা ড্রাফট তৈরি করেছি। আমরা সবসময় সরকারকে সহযোগীতা করতে রাজি আছি, আমরা কোন সংকট চাই না।
তিনি আরও বলেন, পিআর হলে কালো টাকা হবে না, পেশিশক্তি দেখানো যাবে না, সব দলের পার্লামেন্ট হবে, রিচ পার্লামেন্ট হবে। ছোট ছোট দলগুলোও পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পাবে। এক পার্সেন্ট ভোট যে পাবে, সে দলও তিনটা আসন পাবে। এখন কেউ যদি মনে করে, এতগুলো দল পার্লামেন্টে আসলে আমার একার কর্তৃত্ব সব… আমি একা খাব। একটি অংশগ্রহণমূলক সংসদ হোক, সকলের অংশীদারিত্বে জনগণের সরকার দেশ চালাক এটা যারা চায় না, তারাই পিআরের বিরোধিতা করে। সুতরাং, জ্ঞানীদের জন্য ইশরায় যথেষ্ট।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমরা নির্বাচনে যাব অবশ্যই, কিন্তু তার আগে পিআর-এর দাবি পূরণ করে ইনশাল্লাহ আমরা নির্বাচনে যাব। এ দাবি আমাদের চলতেই থাকবে। আমাদের দাবি মানতে হবে, তারপরে আমরা নির্বাচনে যাব। সবাইকে বাদ দিয়ে যদি, একই নির্বাচন করতে চান, তাহলে দেশের মানুষ সেটা আর হতে দিবে না। একাই নির্বাচন করবেন, ওই চিন্তা করে আর ঘুম নষ্ট করার দরকার নেই।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরও বলেন, ‘বহুকষ্টের বিনিময়ে আমরা দেশ সংস্কারে সুযোগটা পেয়েছি। কোন দলীয় সরকার আসলে আর সংস্কারের সুযোগটা আমরা পাব না। ইতোমধ্যে একটি দলের স্থায়ী কমিটির এক নেতা বলেছেন, আপনার যত সংস্কার আইন-কানুন বদলান, আমরা ক্ষমতাই এলে সব মুছে দিব।
বিএনপি নেতাকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, যাওয়ার আগেই যদি মুছে দেন, তাহলে ক্ষমতায় গেলে কি করবেন।
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির বলেন, সশস্ত্র বাহিনীকে ভিপি নূরকে মারতে দেখছি। আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের কাউকে আটক করতে দেখিনি।
সশস্ত্র বাহিনীর এই সমালোচনার কারণে তাদের জুলাই যোদ্ধাদের দিকে। প্রতিরক্ষা বাহিনীতে বিন্দুমাত্র চেঞ্জ আজ পর্যন্ত হয়নি। যে সেট আপ হাসিনা করেছেন সেটাই আছে। তারা দ্রুত নির্বাচন চান যেন পলাতকদের দ্রুত ফিরিয়ে আনতে পারেন।
মূল প্রবন্ধে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই সনদ জনগণের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ দলিল। এটা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আইনি ভিত্তি তৈরি করেছে। তবে এর অস্পষ্টতা ও রাজনৈতিক ভিত্তির কারণে বাস্তবায়ন বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে।