জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ৩৬ দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)। শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ, গুম খুনের বিচার, জুলাই ঘোষণাপত্রসহ বিভিন্ন দাবিতে ৩৬ দিন ধরেই নানাভাবে স্মরণ ও উদ্যাপন করার ঘোষণা দিয়েছে রাজনৈতিক এই প্লাটফর্মটি।
সোমবার (৩০ জুন) পুরানা পল্টনে আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জুলাই ঘোষণাপত্র, প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এবং গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পরবর্তী কর্মসূচি শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ জুলাই থেকে ৩৬ জুলাই পর্যন্ত দেশব্যাপী গণসংযোগ; ৪ জুলাই: বরিশাল বিভাগীয় গণসংযোগ; ৫ জুলাই : রংপুর বিভাগীয় গণসংযোগ; ১১ জুলাই : চট্টগ্রাম বিভাগীয় গণসংযোগ; ১২ জুলাই: সিলেট বিভাগীয় গণসংযোগ; ১৫ জুলাই : নারী শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ; ১৬ জুলাই: দোয়া ও শহীদদের কবর জিয়ারত; ১৮ জুলাই : বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিরোধ স্মরণ; ১৮ জুলাই: খুলনা বিভাগীয় গণসংযোগ; ১৯ জুলাই: রাজশাহী বিভাগীয় গণসংযোগ; ১৯ জুলাই: মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ স্মরণ; ২০ জুলাই: মেহনতী মানুষের প্রতিরোধ স্মরণ; ২৫ জুলাই: ময়মনসিংহ বিভাগীয় গণসংযোগ; ২৬ জুলাই: ঢাকা বিভাগীয় গণসংযোগ; ১ আগস্ট: জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল; ৩ আগস্ট: হাসিনা পতনের ১ দফা দাবি স্মরণ এবং ৫ আগস্ট: গণঅভ্যুত্থান ও নতুন বাংলাদেশ দিবস উদ্যাপন করবে আপ বাংলাদেশ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ। এসময় উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব আরেফিন মোহাম্মদ হিজবুল্লাহ, প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ এবং মুখপাত্র সারমিন সুলতানা ইরাসহ অনেকেই।
আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেহেতু স্বাধীনতার পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ঘটনা এবং একটি অভূতপূর্ব গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যেহেতু ৩৬ জুলাই বাংলাদেশের আপামর ছাত্রজনতা একটি স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, এবং ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ) এই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠা অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদান ও অংশগ্রহণকারী তরুণদের একটি রাজনৈতিক উদ্যোগ, তাই বাংলাদেশের মানুষের জীবনের এই ঐতিহাসিক অর্জনকে গোটা ৩৬ দিন ধরেই নানানভাবে স্মরণ ও উদ্যাপন করবে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ)।
তিনি জানান, ৩৬ দিনব্যাপী আমাদের এই কর্মসূচির কেন্দ্রে থাকবে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, আহতদের সুচিকিৎসা নিশ্চিতকরণ, শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তোলার রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের দাবি, গণকবরে অশনাক্তকৃত শহীদদের লাশ ডিএনএ প্রোফাইলিংয়ের মাধ্যমে শনাক্ত করে শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, ফ্যাসিস্ট দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার, গুম,খুন, গণহত্যার সাথে জড়িতদেরকে বিচারের মুখোমুখি করা এবং জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র আদায়।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও জুলাই ঘোষণাপত্রের দাবিতে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সংলাপের আয়োজন করবে ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশ (আপ বাংলাদেশ।) পাশাপাশি আপ বাংলাদেশ সারাদেশে সাধারণ সমর্থক বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা করবে ইনশাআল্লাহ। আপ বাংলাদেশ বিশ্বাস করে গণঅভ্যুত্থানের ফলে গঠিত সরকার এই দেশের জনগণের পালস বুঝতে সক্ষম হবে এবং জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রাথমিক রাষ্ট্রীয় দলিল, জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে আর কোন টালবাহানা কিংবা কালক্ষেপণ ও ছলচাতুরীর আশ্রয় নেওয়ার ভুল করবে না।
আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, পাশাপাশি আজকের সংবাদ সম্মেলন থেকে এই কথাও আমরা স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে, জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র কোন প্রাইভেট ইনিশিয়েটিভ হতে পারে না, এটি একটি রাষ্ট্রীয় দলিল। ফলে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র অবশ্যই অবশ্যই সরকারকেই দিতে হবে।* এর ব্যত্যয় হলে জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা প্রয়োজনে আবারও রাজপথে নেমে এসে সকল রাজনৈতিক দল, মত ও জুলাইয়ের অংশীজনকে সাথে নিয়ে সরকারের কাছ থেকেই জুলাই ঘোষণাপত্র আদায় করে নিবে ইনশাআল্লাহ।