রাজনীতি

ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে তার ব্যাখ্যা দিন

ডিসেম্বরে নির্বাচন না হলে তার ব্যাখ্যা দিন


বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেছেন, বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন সবগুলোই বাংলাদেশের প্রয়োজন। এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। তবে নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয়, তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে। সরকারকে বলব, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

রোববার (১ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে গণসংহতি আন্দোলনের প্রথম নির্বাহী সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট আবদুস সালামের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকীতে দলটির উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণসভায় তারা এ কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, বিচারের বিষয়ে মানুষ দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখতে চায়। সংস্কার, নির্বাচন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত- এগুলো পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কিত। বিচার-সংস্কার-নির্বাচনে এগুলো একসূত্রে গাঁথা। রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সংস্কারগুলোর মধ্যে দূরত্ব ও অনাস্থা দেশকে বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, নির্বাচন চাওয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখার কিছু নেই। যদি ডিসেম্বরে নির্বাচন না হয়, তাহলে সেটার ব্যাখ্যা জনগণের সামনে হাজির করতে হবে। নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ না দিলে সংস্কারের অনেক বিষয় সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। সংস্কারের অনেকগুলো বিষয়ে ঐকমত্য আছে, আবার কিছু বিষয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচন নিয়ে ঐকমত্য তৈরি করা এবং নানা বিষয় সংস্কারও সম্ভব। নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার নিজেও নানা পক্ষপাত দেখাচ্ছে। দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাও জরুরি।

রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ূম বলেন, বাংলাদেশে এখন যে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, আবদুস সালাম যখন রাষ্ট্র সংস্কার, সংবিধান নিয়ে আলোচনা তুলেছিল- তখন তা এতো সহজ ছিল না। বিদ্যমান রাষ্ট্রকাঠামোতে অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে, বিএনপিও ৩১ দফায় বলেছে। রাষ্ট্র মেরামত বা সংস্কার যাই করি, সেজন্য সংবিধান সংস্কার সভার নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের মতামত গ্রহণ করতে হবে।

ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, সংবিধানের মালিক জনগণ, অন্য কেউ না। সংবিধানের মালিকানা জনগণের হাতে প্রত্যার্পণ করতে হবে। দেশ যেন কোনো সংঘাতের দিকে না যায়, সেটা আমাদের সবার মনোযোগ দিতে হবে। সরকারকে বলবো, সবার সঙ্গে আলোচনা করে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।

তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি রাজনৈতিক দল। তাদের নিবন্ধন বিগত আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে বাতিল করে দিয়েছিল। আজকে উচ্চ আদালত সেটা ফিরিয়ে দিয়েছেন।

বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, শেখ হাসিনাকে যারা ফ্যাসিস্ট হয়ে উঠতে সাহায্য করেছিলেন, এখন তারা নতুন বন্দোবস্ত করে বহাল তবিয়তে রয়েছেন। ফ্যাসিজমের থেকে যাওয়া শিকড়ে পানি ঢেলে তারা আবার ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাচ্ছেন।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্যে ফাটল ধরেছে। কোনো অভ্যুত্থানের প্রথম সারির নেতারা এতটা বিতর্কিত হননি, যতটা এখন হচ্ছেন। তরুণেরা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজে জড়িত হয়ে পড়েছেন, যা লজ্জাজনক।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, মুক্তিযুদ্ধ এমন একটি সংগ্রামের নাম- যেটা সবার জীবনে সুযোগ আসে না। সালাম ভাইয়ের জীবন থেকে সেটা শিখছি। বিএনপিকে বলেছিলাম- জাতীয় অধিকারের প্রশ্নে আপনারা ঐক্য গড়ে তুলুন। সরকার আমাদের ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারেনি, রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্দিষ্ট রোডম্যাপ দিতে পারেনি। আমাদের ঐতিহাসিক সুযোগ আমরা যেন নষ্ট না করি।

সভায় আরও বক্তব্য দেন- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ নিলু প্রমুখ।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।