বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, নির্বাচনের আগে গণহত্যার বিচার শহীদ পরিবারের দাবি। গণহত্যার বিচার ও রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার শেষ করে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করাই অন্তর্বর্তী সরকারের মূল দায়িত্ব। সরকার সেই দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে আবারো ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। সেজন্যই জামায়াতে ইসলামী সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত ছিল এবং আছে।
শনিবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নূরুল ইসলাম বলেন, গণহত্যার বিচার ও সংস্কারের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে যে কোনো সহযোগিতা জামায়াতে ইসলামী করবে। শহীদদের নিজ দলের কর্মী দাবি করা দল কতজন শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে প্রশ্ন রেখে বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামী শহীদ এবং আহতদের দলীয় সম্পদে রূপ দেয়নি, দিবে না। জামায়াতে ইসলামীর স্পষ্ট ঘোষণা প্রত্যেক শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীরা আমাদের জাতীয় বীর, জাতীয় সম্পদ। সেজন্য জামায়াত শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহায়তা এবং আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দলমত নির্বিশেষে চালিয়ে আসছে। আগামীতেও সেই ধারা অব্যাহত রাখবে। জামায়াত শহীদদের পাশে যেভাবে দাঁড়িয়েছে অন্য কোনো দল কিংবা রাষ্ট্র সেইভাবে দাঁড়ায়নি, দাঁড়াতে পারেনি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যত নিপীড়ন চালিয়েছে জনগণ ততই প্রতিবাদী আর বিক্ষুব্ধ হয়েছে। রাষ্ট্রীয় শক্তিকে ব্যবহার করে জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে আওয়ামী লীগ। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালীন জামায়াতে ইসলামীর আমির বিদেশে ব্যক্তিগত কাজে অবস্থান করায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সর্মথন ও সহযোগতিা দিতে দেশে ছুটে আসেন। তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতা করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেন। সেজন্যই সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ছাত্র-জনতার সহযোগিতায় কাজ করে। ঢাকা মহানগরীতে বিনামূল্যে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স এবং বিভিন্ন হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। খুনি হাসিনা ওই আন্দোলনে জামায়াত-শিবিরের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার কথা স্বীকার করে জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেয়। জামায়াতে ইসলামী দলের চেয়ে দেশের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দুর্বারগতিতে রূপ দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়েছে। দলকে নিষিদ্ধ করার প্রতিবাদে আলাদা কোনো কর্মসূচি সেই সময় দেওয়া হলে, আওয়ামী লীগ ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দিয়ে গণহত্যা আরো জোরালো করার সুযোগ পেতো। কিন্তু আওয়ামী লীগকে সেই সুযোগ দেয়নি জামায়াতে ইসলামী।
ঢাকা দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, ড. হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলাওয়ার হোসেন, মোহাম্মদ কামাল হোসেন, অধ্যাপক ড. আব্দুল মান্নান, মহানগরীর সদস্য ফরিদুল ইসলাম, আবদুস সালাম, কামরুল আহসান হাসান, শাহীন আহমেদ খান, প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের আবদুস সাত্তার সুমনসহ অন্যান্য নেতারা।
সভা শেষে এক লাখ টাকা করে ১৫ পরিবার এবং দুই লাখ টাকা করে ছয় পরিবারের মাঝে মোট ২৭ লাখ টাকা টাকার আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।