রাজনীতি

সংসদে ‘পিআর’ পদ্ধতিতে আসনবণ্টন নিয়ে জুনায়েদের ব্যাখ্যা

সংসদে ‘পিআর’ পদ্ধতিতে আসনবণ্টন নিয়ে জুনায়েদের ব্যাখ্যা


বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আসনবণ্টনে প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতি বাস্তবসম্মত নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইউনাইটেড পিপলস বাংলাদেশের (আপ বাংলাদেশ) আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি আলী আহসান জুনায়েদ।

আজ শনিবার (২৮ জুন) রাতে ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে তিনি এ বিষয়ে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের আসনবণ্টনে Proportional Illustration (PR) পদ্ধতি বাস্তবসম্মত নয়। এই পদ্ধতিতে দলগুলো প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন পায়, যার ফলে কিছু দল অল্পসংখ্যক ভোট পেয়েও সংসদে প্রবেশ করে এবং কখনো কখনো সরকার গঠনে সিদ্ধান্তমূলক ভূমিকা নেয়। এতে শক্তিশালী সরকার গঠনের সম্ভাবনা অনেকাংশেই ব্যাহত হতে পারে, যার ফলশ্রুতিতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়, জোটভিত্তিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায় এবং জনগণের প্রত্যক্ষ রায় দুর্বল হয়ে পড়ে। বাংলাদেশের মতো রাজনৈতিকভাবে মেরুকরণকৃত ও সংঘাতপ্রবণ সমাজে PR পদ্ধতি আরও বিভাজন, প্রতিহিংসা ও সিদ্ধান্তহীনতা ডেকে আনতে পারে।

এ ছাড়া বর্তমান পদ্ধতিতে একজন প্রার্থী একটি নির্দিষ্ট আসনের হয়ে নির্বাচনে অংশ নেন এবং যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনিই নির্বাচিত হন। এর ফলে একজন জনপ্রতিনিধি ও তার এলাকার ভোটারের মধ্যে একটি সরাসরি রাজনৈতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। জনগণ জানে- এই ব্যক্তিই আমাদের প্রতিনিধি, আমাদের দাবি, সমস্যা ও উন্নয়নের দায়িত্ব তার ওপর বর্তায়। ফলে একজন সংসদ সদস্য শুধু দলীয় আদর্শ নয়, নিজ এলাকার ভোটারের ইচ্ছা ও চাহিদার প্রতিও জবাবদিহি হতে বাধ্য হন।

অন্যদিকে PR পদ্ধতিতে, প্রার্থীরা একটি নির্দিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি নন, বরং তারা দলের তালিকা থেকে নির্ধারিত হয়। ফলে তারা মূলত দলীয় নেতৃত্বের প্রতি দায়বদ্ধ থাকেন, জনগণের প্রতি নয়। এতে স্থানীয় সমস্যার প্রতি সংবেদনশীলতা কমে যায়, কারণ তাদের নির্বাচিত হওয়ার ভিত্তি ভোটারের সরাসরি সমর্থন নয়, বরং দলের সিদ্ধান্ত।

তবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ রাজনৈতিক কাঠামো গঠনের জন্য ভবিষ্যতে যদি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদব্যবস্থা চালু করা হয়, সেখানে উচ্চকক্ষে PR পদ্ধতির প্রয়োগ যৌক্তিক হতে পারে। উচ্চকক্ষের দায়িত্ব নীতি পর্যবেক্ষণ ও সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা- সেখানে দলভিত্তিক আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, সংখ্যালঘু, নারী, প্রবাসী বা পেশাজীবীদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত হবে। এভাবে আমরা জনপ্রতিনিধিত্ব ও নীতিগত ভারসাম্য- দুইই অর্জন করতে পারি।

প্রসঙ্গত, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (Proportional Illustration বা PR) একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা, যা নির্বাচনের ফলাফলের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসন সংখ্যা বরাদ্দের একটি পদ্ধতি। এর মূল ধারণা হলো, নির্বাচনে দলগুলো যে পরিমাণ ভোট পায়, আইনসভায় তাদের আসন সংখ্যাও সেই আনুপাতিক হারে হওয়া উচিত। যদি কোনো দল নির্বাচনে ২০ শতাংশ ভোট পায়, তবে আইনসভায় তাদের আসনের সংখ্যাও ২০ শতাংশ হওয়া উচিত।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।