গত বছর জুলাই আন্দোলনের সময় কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার সময় এক ভক্তের সঙ্গে সাকিব আল হাসানের তর্কের ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানান মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। এই প্রসঙ্গে দেশের একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাকিব জানালেন সেই ঘটনার আসল কথা।
সাকিব বলেন, ‘আমার মনে হয়েছে, ওই ব্যক্তি ইচ্ছা করেই আমাকে উসকে দিতে এসেছিল, কিংবা হয়তো সে হতাশ হয়ে পড়েছিল। সে বারবার আমাকে জিজ্ঞেস করছিল, ‘আপনি কিছু করছেন না কেন?’ এক পর্যায়ে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, ‘ভাই, আপনি কী করেছেন?’ এখান থেকেই কথাবার্তা বেড়ে যায়।’
সাকিব আরও বলেন, ‘দেখুন, মানুষ বিচার করবে আমি কিছু করছি কিনা। কিন্তু কেউ যদি আমাকে বারবার প্রশ্ন করে, আমার কি উত্তর দেওয়ার অধিকার নেই? আমি তো সেখানে তাদের জিজ্ঞেসও করেছিলাম — আমাকে বলুন কী করা উচিত? আমি অবহেলা করছিলাম না। আমি শুধু জানতাম না, কী করলে সেটা যথাযথ বা কার্যকর হবে। তখন সরকারসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আমাকে কিছু পোস্ট দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কী হবে? তাতে কি পরিস্থিতির উন্নতি হবে, নাকি আরও উত্তেজনা বাড়বে? আমি সবসময় দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করি। যদি আমি সরাসরি পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে খালি খালি কথা বলে কী লাভ?’
সংবাদমাধ্যমে তার নেতিবাচক প্রচার নিয়েও খোলামেলা কথা বলেছেন সাকিব। ‘হ্যাঁ, কিছুটা সত্যি। তবে নিজের দোষও স্বীকার করি। আমি মিডিয়ার সাথে সম্পর্কটা কখনো ঠিকমতো গুছিয়ে নিতে পারিনি। আসলে আমি ইমেজ ম্যানেজমেন্ট পারি না। এটাতে আমি স্বাভাবিক নই। এমনকি এই সাক্ষাৎকারেও আমি হয়তো ঠিক কথাটাই বলছি, কিন্তু জানি এর কিছু অংশ আবার ভুলভাবে উপস্থাপন হবে।’
প্রথম দিন থেকেই নেতিবাচক প্রচারণার শিকার কি না এই প্রশ্নে সাকিব স্বীকার করেন, ‘হ্যাঁ, শুরু থেকেই আমার ব্যাপারে নেতিবাচক প্রচারণা হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রেও যখন এমন কিছু হয়েছে, তখন প্রতিবাদ হয়েছে, জবাব চাওয়া হয়েছে। কিন্তু আমি কখনো কাউকে জিজ্ঞেস করিনি। তাই হয়তো সহজেই আমার ওপর দোষ চাপানো গেছে। তবে আমি একটা জিনিস মানি—যদি আমার উদ্দেশ্য ঠিক থাকে, যদি আমি কারও ক্ষতি না করতে চাই, তাহলে আমার চিন্তার কিছু নেই। তারা হয়তো ভেবেছে যা করেছে তা ভালো, কিন্তু আমি আমার জায়গা থেকে চেষ্টা করেছি কাউকে কষ্ট না দিয়ে সঠিক কাজ করতে।’
দায়িত্বশীল আচরণ, নিজের সীমাবদ্ধতা মেনে নেওয়া আর বারবার ভুল ব্যাখ্যার শিকার হওয়া — এই নিয়েই যেন এগিয়ে যাচ্ছে সাকিব আল হাসানের ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিজীবন। তবুও মাঠে ফেরার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, দেশের জন্য শেষটা রাঙানোর স্বপ্ন তাকে থামিয়ে রাখেনি।