খেলাধুলা

টাইগার ব্যাটারদের ভরাডুবি, জিম্বাবুয়ের টার্গেট ১৭৪ রান

টাইগার ব্যাটারদের ভরাডুবি, জিম্বাবুয়ের টার্গেট ১৭৪ রান


সিলেটে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার প্রথম টেস্টে স্বাগতিক বাংলাদেশের টপ অর্ডার ব্যাটারদের ধারাবাহিক ব্যর্থতা আবারো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে দ্বিতীয় ইনিংসেও। এক সময় মনে হচ্ছিল, দল ভালো অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অভিজ্ঞদের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিং দলকে বিপদে ফেলেছে।

টেস্টের তৃতীয় দিন দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতেই শাদমান ইসলাম ৪ রানে ফিরলে ব্যাকফুটে চলে যায় দল। এরপর মাহমুদুল হাসান জয় ও মমিনুল হক খানিকটা প্রতিরোধ গড়লেও, সেটা বড় রানে রূপ পায়নি। জয় ৩৩ আর মোমিনুল ৪৭ রান করে ফিরে যান। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত একমাত্র ব্যাটার যিনি কিছুটা দৃঢ়তা দেখিয়ে তার ৬০ রানের ইনিংসে তৃতীয় দিন শেষ করেন। তবে চতুর্থ দিনেই তা রুপ নেয় হতাশায়।

দলকে খানিকটা ভরসা দেওয়া শান্ত দিনের শুরুতেই বিদায় নেন। এর আগে তৃতীয় দিন শেষ বিকেলে অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম মাত্র ৪ রানে ফিরেছেন। শান্তর আউটের পর বিদায় নেন মিরাজ ও তাইজুলও। পরে জাকের আলী একা চেষ্টা করলেও, তার ৫৮ রানের ইনিংসও শেষ রক্ষা করতে পারেনি। ইনিংসের শেষ দিকে হাসান মাহমুদ কিছুক্ষণ লড়াই করেন (১২ রান), কিন্তু তাৎক্ষণিক দুই বলে দুটি উইকেট পড়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়ে দলের ব্যাটিং লাইনআপ।

পুরো ইনিংসে ব্যাটাররা নিজেদের উইকেটটা যেন উপহার দিয়ে এসেছেন প্রতিপক্ষকে। অলআউট হয়ে যায় মাত্র ২৫৫ রানে, যেখানে এক সময় দল ছিল ১৩৮/৩। অর্থাৎ শেষ ৭ উইকেট পড়ে মাত্র ১১৭ রানে।

প্রথম ইনিংসেও একই দৃশ্য দেখা গেছে। শান্ত-মমিনুল ভালো শুরু দিয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি, আর মিডল অর্ডার থেকে কেউই ম্যাচ ধরে রাখতে পারেননি। দুই ইনিংস মিলিয়ে মুশফিক ৪ ও ৪, মিরাজ ১ ও ১১ রান করেছেন। এমন ব্যাটিং পারফরম্যান্সে জয়ের আশাটা ফিকে হওয়াই স্বাভাবিক।

বাংলাদেশের ব্যাটিং ইউনিট এখন তীব্র প্রশ্নের মুখে। টেস্ট ফরম্যাটে ম্যাচের মোড় ঘোরানোর দায়িত্ব যাদের হাতে থাকার কথা, সেই মিডল অর্ডার ও লোয়ার অর্ডার বারবার ব্যর্থ হচ্ছেন। চাপের মুখে তারা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন, নেই কোনো স্ট্র্যাটেজিক রক্ষাকবচ।

এদিকে বাংলাদেশের ভাঙনের সুরে দ্বিতীয় ইনিংসের পরিসমাপ্তি ঘটল ব্লেসিং মুজারাবানির জাদুকরী স্পেলে। জাকের আলীকে ফিরিয়ে দিয়ে মুজারাবানি স্পর্শ করলেন টেস্ট ক্রিকেটে এক বিশেষ মাইলফলক—জিম্বাবুয়ের পক্ষে ম্যাচের সংখ্যার হিসেবে যৌথভাবে সবচেয়ে দ্রুত ৫০ টেস্ট উইকেটের মালিক হলেন তিনি।

এই উইকেটেই মুজারাবানি গড়লেন ইতিহাস—মাত্র কিছু টেস্ট খেলে ৫০ উইকেট পূর্ণ করলেন। জিম্বাবুয়ের টেস্ট ইতিহাসে দ্রুততম সময়ে এই কীর্তিতে ভাগ বসালেন তিনি।

এই ইনিংসে বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যর্থতার পাশাপাশি মুজারাবানি ও তার সহযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ভাঙন ধরিয়েছে বারবার। শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭৪ রানের—যা জিম্বাবুয়ের জন্য এক বাস্তবসম্মত টার্গেট এবং সিরিজে ১-০ এগিয়ে যাওয়ার সোনালী সুযোগ।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।