প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইর (পিএসজি) সঙ্গে সম্পর্কের অবসান ঘটেছে প্রায় এক বছর আগে। তবে সেই অধ্যায়ের রেশ এখনও শেষ হয়নি। এবার সাবেক ক্লাবের বিরুদ্ধে ‘নৈতিক হয়রানির’ অভিযোগ এনে ফ্রান্সের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন ফরাসি সুপারস্টার কিলিয়ান এমবাপ্পে।
প্যারিস প্রসিকিউটর অফিস নিশ্চিত করেছে, ফ্রান্সের এই তারকা ফুটবলারের আইনজীবীরা আনুষ্ঠানিকভাবে একটি মামলা দায়ের করেছেন, যেখানে দাবি করা হয়েছে, পিএসজি তাকে ক্লাবের মূল দল থেকে বিচ্ছিন্ন করে ‘লফটিং’-এর শিকার করেছে—ফ্রান্সে যেটা বোঝায় কোনো খেলোয়াড়কে শাস্তিমূলক, ক্রীড়াগত কিংবা প্রশাসনিক কারণে আলাদা রাখা।
এমবাপ্পে তার অভিযোগে আরও দাবি করেছেন, পিএসজি তার ৫৫ মিলিয়ন ইউরো (৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) বেতন এখনও পরিশোধ করেনি। এছাড়া ২০২৩-২৪ মৌসুম শুরুর আগে তাকে দলছুট করে অনুশীলন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার বিষয়টিকেও মানসিকভাবে ‘হয়রানিকর আচরণ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২২ সালে এমবাপ্পে যখন পিএসজির সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেছিলেন, ক্লাব তাকে সর্বকালের সবচেয়ে লাভজনক প্রস্তাব দিয়েছিল। তখন মাঠে তাকে ‘২০২৫’ লেখা জার্সি হাতে তুলে দেওয়া হয়। কিন্তু চুক্তিটি ছিল ২০২৪ পর্যন্ত, যেখানে আরও এক বছর বাড়ানোর সুযোগ ছিল শুধুমাত্র খেলোয়াড়ের হাতে।
২০২৩ সালের জুনে এমবাপ্পে জানিয়ে দেন, তিনি সেই এক বছর বাড়ানোর অপশনটি নেবেন না। ফলে পিএসজির সামনে দুইটি পথ ছিল—চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই তাকে বিক্রি করে দেওয়া, অথবা বিনা মূল্যে হারানোর ঝুঁকি নেওয়া। তখন তাকে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোতে আল হিলালের প্রস্তাব দেওয়া হলেও এমবাপ্পে তা ফিরিয়ে দেন।
এ ঘটনার পর এমবাপ্পেকে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক-মৌসুম সফরে দলে রাখা হয়নি এবং তাকে মূল দলের বাইরে অনুশীলনে পাঠানো হয়। প্রথম লিগ ম্যাচেও তিনি খেলেননি, তবে পরে আলোচনা শেষে আবার দলে ফিরে আসেন।
চলতি বছরের এপ্রিলেই এমবাপ্পের আইনজীবীরা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে তারা পিএসজির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন। অবশেষে সেটিই বাস্তবে রূপ নিয়েছে। যদিও পিএসজি আনুষ্ঠানিকভাবে এখনও এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি।
যদিও এমবাপ্পে রিয়াল মাদ্রিদে এসে নতুন যাত্রা শুরু করেছেন, কিন্তু পিএসজির সঙ্গে তার সম্পর্কের ইতি ঘটেছে অনেক প্রশ্ন এবং তিক্ততার মধ্য দিয়ে। পিএসজি দাবি করেছিল, এমবাপ্পে তাদের প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছেন, কারণ ক্লাবের দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তারা তার পছন্দের খেলোয়াড়দের দলে ভেড়াতে পারেনি।
এদিকে এমবাপ্পে মনে করেন, অপেশাদার ব্যবহারের শিকার হয়েছেন তিনি, যেখানে তার মতামত এবং মর্যাদা উপেক্ষিত হয়েছে।