খেলাধুলা

বিওএ কমিটির কার্যকর প্রতিনিধিত্ব এবং নানা প্রশ্ন

বিওএ কমিটির কার্যকর প্রতিনিধিত্ব এবং নানা প্রশ্ন


বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) ৩৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির ১৩ সদস্যই নিষ্ক্রিয় বা পলাতক। তাই সংস্থাটির কার্যক্রম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নিষ্ক্রিয় পদগুলোতে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের মনোনীত প্রতিনিধি হালনাগাদ করাটা সময়ের দাবি। সংশ্লিষ্ট ফেডারেশনে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনাও পাঠিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। কিন্তু বর্তমানে দেশের অধিকাংশ ক্রীড়া ফেডারেশন চলছে অ্যাডহক কমিটি দিয়ে। আপৎকালীন সময়ের জন্য গঠিত এসব কমিটির প্রতিনিধি বিওএতে যুক্ত করার অর্থ হচ্ছে তাদের আসন্ন নির্বাচনী কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা। অনির্বাচিত কমিটির সদস্যদের মাধ্যমে বিওএর মতো একটি সংস্থার কমিটি নির্বাচনের বিষয়ও কিন্তু প্রশ্নের ঊর্ধ্বে থাকছে না।

৫ আগস্ট রাষ্ট্র ক্ষমতায় পালাবদলের পর অনেক ক্রীড়া সংগঠক আত্মগোপনে চলে গেছেন। বিওএ নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ ও মাহবুব আরা বেগম গিনি, উপমহাসচিব ইন্তেখাবুল হামিদ অপু ও নজিব আহমেদ, নির্বাহী সদস্য আব্দুর রকিব মন্টু, আমির হোসেন বাহার, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, আসাদুজ্জামান কোহিনুর, জাকি আহমেদ রিপন, এম বি সাইফ, হাবিবুর রহমান, এস এম মোর্তজা রশিদী দারা ও মোশারফ হোসেন মোল্লা কার্যক্রমে নিয়মিত নন। উল্লিখিতদের অধিকাংশই অলিম্পিকভুক্ত এবং নন-অলিম্পিক ক্রীড়া ফেডারেশন কোটায় নির্বাচিত। ৫ আগস্টের পর অলিম্পিক এবং নন-অলিম্পিক মিলিয়ে ২৬ ক্রীড়া ফেডারেশনের ২৫টির কমিটিতে পরিবর্তন এসেছে। যে কমিটি দিয়ে নির্বাচিত হলেন, আপনি বর্তমানে সে কমিটিতে নেই। এ অবস্থায় বিওএর পদে থাকার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ হতে বাধ্য, হচ্ছেও।

প্রশ্নটা প্রকট হচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা থেকে সদস্য পরিবর্তন সংক্রান্ত ইস্যুতে। বর্তমান কমিটিতে এনএসসির প্রতিনিধি পদে বর্তমান সচিব মো. আমিনুল ইসলাম এবং সেনাবাহিনী ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের প্রতিনিধি হিসেবে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কবীরকে সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়ায় মেনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাহলে অন্য সদস্যর বেলায় কেন এটা করা হবে না!

গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-৮-এ সদস্য পদ বাতিলের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, সদস্য যে ফেডারেশনের অন্তর্ভুক্ত, সে ফেডারেশন বিলুপ্ত হওয়া। কিন্তু ফেডারেশন না কমিটি, কোনটি বিলুপ্ত হবে—তার ব্যাখ্যা নেই। গঠনতন্ত্রে বলা আছে, মৃত্যু বা পদত্যাগ করলে সদস্যপদ শূন্য হবে। ‘পদত্যাগ’ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই। এ কারণে অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক পদ ছাড়ার পরও মো. আব্দুর রকিব মন্টুকে বিওএর সদস্য দেখানো হচ্ছে। অনুমোদিত সংস্থা বিওএর মহাসচিব বরাবর লিখিত দিয়ে মনোনীত প্রতিনিধিত্ব প্রত্যাহার করলেও সদস্য পদ বাতিল হতে পারে। এ জায়গায় বর্তমান ক্রীড়া ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি তাদের প্রতিনিধি পরিবর্তন করতে পারে।

অলিম্পিক আন্দোলনের মৌলিক নীতিমালার দলিল আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি (আইওসি) চার্টার। আইওসির সদস্য সংস্থা পরিচালিত হওয়ার কথা চার্টার অনুযায়ী। যাতে কার্যক্রম সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে সবকিছু বলা থাকবে। কিন্তু বিওএর ক্ষেত্রে তেমনটা দেখা যাচ্ছে না। বর্তমান গঠনতন্ত্রে নানা ইস্যুতে অস্পষ্টতা বিদ্যমান! বিগত দিনে এ নিয়ে প্রশ্ন না ওঠায় এভাবেই চলে এসেছে কার্যক্রম!

বিওএ গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ-৭ সাধারণ পরিষদের ১-এ ক্রীড়াঙ্গনে কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে অলিম্পিক এবং নন-অলিম্পিক ফেডারেশন কোটায় পরিবর্তিত বিভিন্ন ফেডারেশন থেকে প্রতিনিধি পরিবর্তনের দাবি যৌক্তিক। যৌক্তিকতা প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে বর্তমান ফেডারেশনগুলো অ্যাডহক কমিটি দিয়ে চলায়।





Source link

Shares:
মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।