লন্ডনের ঐতিহাসিক লর্ডসের মাঠে শনিবার ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল দক্ষিণ আফ্রিকা। বহু প্রতীক্ষিত ও বহুবার স্বপ্নভঙ্গের যন্ত্রণা পেছনে ফেলে প্রথমবারের মতো কোনো বড় আইসিসি শিরোপা ঘরে তুলল প্রোটিয়ারা—বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-এ ঐতিহাসিক জয় তাদের।
পুরো ক্রিকেট বিশ্ব যেন আনন্দে ফেটে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার এই জয়ের পর। কেউ বলছেন এটি ‘আশা থেকে ইতিহাসের রূপান্তর’, কেউ বলছেন ‘ক্রিকেটের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটে উঠেছে এই ম্যাচে’।
প্রোটিয়া কিংবদন্তি এবি ডি ভিলিয়ার্স এক্স-এ লিখেছেন, ‘অসাধারণ জয়! দুর্দান্ত খেলেছে দল। মার্করামের ম্যাচ জয়ী সেঞ্চুরিকে শ্রদ্ধা জানাই, আর টেমবার ঠান্ডা মাথার নেতৃত্ব ছিল অনবদ্য।’
তিনি আরও বলেন,
‘এই মুহূর্তগুলো আমার দুই ছেলের সঙ্গে মাঠে বসে দেখা—ক্রিকেট জীবনের অন্যতম স্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে থাকবে। গো প্রোটিয়াস!’
ভারতের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার প্রশংসায় ভাসিয়েছেন মার্করাম-বাভুমা জুটিকে। এক্স-এ তিনি লেখেন, ‘চতুর্থ ইনিংসে টেস্ট ক্রিকেট আবার প্রমাণ করেছে কেন এটি সেরা ফরম্যাট। মার্করামের স্থিরতা আর বাভুমার দৃঢ়তা এই ম্যাচের ভাগ্য গড়ে দিয়েছে। এই সেঞ্চুরি ও জুটি এক কথায়—আশাকে ইতিহাসে রূপ দেওয়া।’
কিংবদন্তিদের অভিব্যক্তি
- ডেল স্টেইন এক শব্দেই অনুভূতি প্রকাশ করেন: “HOME!!!!!”
- হার্সেল গিবস বলেন, ‘টস থেকেই সবকিছু নিখুঁতভাবে পরিকল্পিত। উপভোগ করো উদযাপন।’
- ক্রিস গেইল লেখেন, ‘মার্করামের ব্যাটিং ছিল অনবদ্য! দক্ষিণ আফ্রিকার এই জয় টেস্ট ক্রিকেটের দারুণ বিজ্ঞাপন।’
- কুমার সাঙ্গাকারা বলেন, ‘টেমবার নেতৃত্বে এই দলটা দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে লক্ষ্য, আবেগ আর বিশ্বাস একটি জাতিকে চ্যাম্পিয়ন বানাতে পারে।’
- ইয়ান বিশপ বলেন, ‘চতুর্থ ইনিংসে মার্করামের অসাধারণ দায়িত্বশীল ব্যাটিং ছিল ইতিহাস গড়ার পেছনের মূল চাবিকাঠি।’
প্রাক্তন অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথের সঙ্গে পোস্ট-ম্যাচ সাক্ষাৎকারে কেশব মহারাজ চোখের জল সামলাতে পারেননি। বললেন, ‘শুধু নিজেদের জন্য নয়, দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য আমরা এটা করেছি। আমরা কৃতজ্ঞ।’
এ জয়ের ফলে দক্ষিণ আফ্রিকা ২০২১ সালের নিউ জিল্যান্ড ও ২০২৩ সালের অস্ট্রেলিয়ার পর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় শিরোপাধারী দল হিসেবে নাম লেখাল।
বিশ্বজয়ী দলটির এই অর্জন শুধু একটি কাপ জেতার গল্প নয়, বরং এটি বছরের পর বছর ধরে চলা কষ্ট, প্রতীক্ষা, ও প্রজন্মের পর প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের কাহিনি। টেস্ট ক্রিকেটের অনন্য মাহাত্ম্য আবারও ফুটে উঠল লর্ডসের সবুজ গালিচায়।