লিগ জয়ের পর মোহামেডান সমর্থকদের স্বস্তি, সংশ্লিষ্টদের হাফ ছেড়ে বাঁচা। উৎসবের রেশ কাটার আগেই সেটা শঙ্কা, জটিলতায় পরিণত হয়েছে। সাদা-কালো শিবিরের সাফল্যের রূপকার ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়তে ঈদের আগেই ক্লাব সভাপতির কাছে পত্র দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর। আর তার এমন সিদ্ধান্তেই আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন ক্লাবটির দল গড়া নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়। এই অবস্থার মাঝে ঘনিয়ে আসছে ক্লাবের পরিচালকমণ্ডলীর নির্বাচন। সংশয়-সংকটের এ পরিবেশে ক্লাব সংশ্লিষ্টদের বড় একটি অংশ মনে করছে ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির সভাপতি হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর সভাপতি দায়িত্ব নিলেই উড়ে যাবে সমস্যা। পরিস্থিতি সেদিকেই এগোচ্ছে বলে ক্লাবসূত্র জানালেও এ নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীরের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
চ্যালেঞ্জ কাপ দিয়ে সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়ার কথা নতুন ফুটবল মৌসুম। প্রত্যাশার চাপের সঙ্গে শিরোপা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ থাকবে মোহামেডান। সবে শেষ হওয়া মৌসুমের পুরো পাওনাই বুঝে পাননি ফুটবলাররা, সেখানে নতুন মৌসুমের নতুন দল তৈরির কাজটা দুরূহ বলেই মানছেন মোহামেডানের শিরোপা জয়ে ভূমিকা রাখা টেকনিক্যাল কমিটির প্রায় সব সদস্যই। আজ সভায় বসছেন মোহামেডানের সাবেক তারকা ফুটবলারদের নিয়ে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি। ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর ছাড়া সেই পাওনা পরিশোধ করা কঠিন বলেই মনে করেন তারা। এর নেপথ্যের কারণটাও ওপেন সিক্রেট। ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর ছাড়া একজনই বড় অঙ্কের অনুদান দেন, তিনি হলেন ক্লাবের সভাপতি সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) আব্দুল মোবিন।
এমন জটিল পরিস্থিতির মধ্যে সাদা- কালো শিবিরের সমর্থকদের প্রত্যাশামাফিক দল গড়ার কৌশল চূড়ান্ত করতেই আজকে সভায় বসছে টেকনিক্যাল কমিটি। কমিটির সদস্য মোহামেডানের সাবেক এক অধিনায়ক এ প্রসঙ্গে কালবেলাকে বলেছেন, ‘এখন পরিকল্পনা সাজালেই হবে না, দ্রুত দল গড়তে মাঠে নামতে হবে। নইলে অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে যাবে মোহামেডান।’
এদিকে ক্লাবের পরিচালকমণ্ডলীর মেয়াদ শেষ হলেও নির্বাচন এবং বার্ষিক সাধারণ সভা আয়োজনের জন্য কয়েকবার তারিখ দিয়ে কার্যকর করা যায়নি। ক্লাবের সাবেক ডিরেক্টর ইনজার্চ লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এবং প্রভাবশালী পরিচালক মাহবুবুল আনামকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপত্তি আছে এখানেও, দীর্ঘদিন ক্লাবের নীতিনির্ধারণী একক ক্ষমতা ভোগ করলেও ক্লাবের সাফল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে লোকমান হোসেন ভূঁইয়ার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থায়ী সদস্যদের একটি বড় অংশ। সেই লোকমান হোসেন ভূঁইয়া যেন নতুন করে আবার ক্ষমতায় না আসতে পারেন সেটি নিয়েও সক্রিয় একটি অংশ। ধারণা, নির্বাচন এবং মোহামেডানের আগামী কমিটি নিয়েই লোকমান-আলমগীরের দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আর এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ফুটবল কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন ইঞ্জিনিয়ার আলমগীর। আলমগীরপন্থিদের ধারণা, সম্প্রতি তার গ্রেপ্তারের পেছনেও রয়েছে মোহামেডান ক্লাবের কুচক্রীদের হাত। এসব নিয়ে ইঞ্জিনিয়ার আলমগীরের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।